ঢাকা | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ — রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি আবাসিক ভবনে মা ও মেয়েকে হত্যার ঘটনায় নতুন করে সন্দেহের তৈরি হয়েছে গৃহকর্মী আয়েশাকে (২৩) ঘিরে। কাজ নেয়ার মাত্র চার দিনের মাথায় তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করে নিখোঁজ হন।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে ভবনের ৭/বি নম্বর ফ্ল্যাটে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহতরা হলেন—মালাইলা আফরোজ (৪৮) এবং তাঁর মেয়ে নাফিসা বিনতে আজিজ (১৫), যিনি মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
গৃহকর্মীর পরিচয় ও পালিয়ে যাওয়ার তথ্য
পুলিশ জানায়, কয়েকদিন আগে ভবনের দারোয়ান মালেকের সহায়তায় আয়েশা নামের ওই যুবতীকে বাসায় কাজের জন্য আনা হয়। সোমবার সকালে ঘটনার পর তিনি নাফিসার স্কুল ইউনিফর্ম পরে ভবন ত্যাগ করেন।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়—
- সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বোরকা পরে তিনি লিফটে ওঠেন,
- আর ৯টা ৩৫ মিনিটে স্কুলড্রেস পরে ভবন থেকে বের হয়ে যান।
পুলিশ বলছে, আয়েশা নিজের পরিচয় হিসেবে জানিয়েছিলেন—রংপুর তাঁর গ্রামের বাড়ি, তিনি জেনেভা ক্যাম্পে চাচা–চাচির সঙ্গে থাকেন, এবং তাঁর বাবা–মা আগুনে মারা গেছেন।
নিহতদের পরিবারের তথ্য
নাফিসার বাবা এম জেড আজিজুল ইসলাম, যিনি উত্তরা সানবিমস স্কুলের শিক্ষক, ওই সময় বাসার বাইরে ছিলেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাসায় ফিরে তিনি স্ত্রী–কন্যাকে নিহত অবস্থায় আবিষ্কার করেন এবং পুলিশকে খবর দেন।
আজিজুল ইসলাম বলেন,
“চার দিন আগে বোরকা পরা একটি মেয়ে দরোয়ানের মাধ্যমে বাসায় আসে। কাজের লোক প্রয়োজন থাকায় স্ত্রী তাকে রেখে দেন। আমরা খুব বেশি কিছু জানতাম না। সে বলেছিল নাম আয়েশা, বয়স ২০ এর মতো।”
হত্যার তদন্ত: পুলিশের প্রাথমিক ধারণা
মোহাম্মদপুর জোনের পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। গৃহকর্মীর পালিয়ে যাওয়া এবং তাঁর ছদ্মবেশ ধারণে পুলিশ বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।
পুলিশ আরও জানায়—
- ঘটনাস্থল থেকে কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে,
- প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে,
- আয়েশাকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চলছে।
ভবনের বাসিন্দাদের বক্তব্য
অভ্যন্তরীণ ক্যামেরার ফুটেজ দেখে বাসিন্দারাও বিস্মিত। তারা জানায়, গৃহকর্মী মেয়েটির আচরণে তেমন কোনো অস্বাভাবিকতা তারা লক্ষ্য করেননি।
পুলিশের তদন্ত চলছে
এ ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করছে পুলিশ। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, গৃহকর্মীর পলাতক অবস্থান এবং তাঁর পরিচয় সম্পর্কেও সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
সম্পাদনায় | এস এম মেহেদী হাসান | E-mail: rupantorsongbad@gmail.com
এস এম মেহেদী হাসান 


























