10:13 am, Tuesday, 16 December 2025

ফেসবুকে চেয়ার তৈরির ছবি পোস্ট, মৌলভীবাজারে আলোচনা-সমালোচনা

মৌলভীবাজার, ১৪ ডিসেম্বর — মৌলভীবাজারে পরিচিত একজন লেখক, সাংবাদিক ও কবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কাঠের গুঁড়ি দিয়ে চেয়ার তৈরির ছবি পোস্ট করার পর স্থানীয় অঙ্গনে শুরু হয়েছে আলোচনা ও ভিন্নমত।

সালেহ আহমদ (স’লিপক) নামের ওই সাংবাদিক ১৪ ডিসেম্বর নিজের ফেসবুক আইডিতে গাছের মোড়া দিয়ে চেয়ার তৈরির তিনটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখেন— “চেয়ার তৈরিতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছি।”
এই পোস্টের পরপরই মৌলভীবাজারসহ সিলেট অঞ্চলে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

স্থানীয়দের অনেকেই জানান, তারা তাকে দীর্ঘদিন ধরে একজন লেখক, কবি ও সংবাদকর্মী হিসেবেই জানতেন। কাঠের কাজ বা আসবাব তৈরির সঙ্গে তার যুক্ত থাকার বিষয়টি তাদের কাছে নতুন।

এ বিষয়ে কবি মিনারা আজমি বলেন,
“ব্যক্তিগতভাবে আমি কখনো শুনিনি বা দেখিনি যে তিনি এই ধরনের কাজে যুক্ত ছিলেন। হঠাৎ এমন একটি পোস্ট অনেকের কাছেই বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। তবে মানুষ যে কোনো সময় নতুন কিছু শিখতে পারে—সেটাও অস্বীকার করার সুযোগ নেই।”

এদিকে মুক্তিবাণী নিউজের সম্পাদক ও প্রকাশক মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন,
“আমি সাধারণত ব্যক্তিগত বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না। তবে একজন সংবাদকর্মী হিসেবে ভিন্নধর্মী কোনো কাজ করাটা অস্বাভাবিক নয়। জীবন ও বাস্তবতা অনেক সময় মানুষকে নতুন পথে নিয়ে যায়।”

অন্যদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তরুণ কবি বলেন,
“সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি যেভাবে আলোচনায় এসেছে, তাতে নানা ধরনের ব্যাখ্যা আসছে। তবে এসবের কোনোটি যাচাইযোগ্য নয়। ব্যক্তি জীবনের সিদ্ধান্ত তার নিজের।” তিনি হয়তো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কাঠমিস্ত্রীর কাজে যোগ দিয়েছেন। হয়তো আমরা জানি না। এটা মন্দ কোন কাজ নয়। বাংলাদেশে আলোচিত-সমালোচিত সাংবাদিক ইলিয়াছ, আমেরিকায় উভার চালিয়ে থাকে।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. জাফর ইকবাল বলেন,
“বাংলাদেশের বাস্তবতায় অনেক সাংবাদিকই সাংবাদিকতার পাশাপাশি অন্য পেশায় যুক্ত হন। শুধুমাত্র সাংবাদিকতা করে সংসার চালানো অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। তাই বিকল্প পেশা গ্রহণ করাটা লজ্জার কিছু নয়।”

তিনি আরও বলেন,
“পরিশ্রম করে কাজ করা সম্মানের। সাংবাদিক হোক বা অন্য কেউ—কেউ যদি নিজের শ্রমে নতুন কিছু করেন, সেটাকে নেতিবাচকভাবে দেখার সুযোগ নেই।”

উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত পোস্ট থেকে সৃষ্ট আলোচনা এখন স্থানীয় পর্যায়ে কৌতূহলের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেননি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ফেসবুকে চেয়ার তৈরির ছবি পোস্ট, মৌলভীবাজারে আলোচনা-সমালোচনা

Update Time : 04:31:45 pm, Sunday, 14 December 2025

মৌলভীবাজার, ১৪ ডিসেম্বর — মৌলভীবাজারে পরিচিত একজন লেখক, সাংবাদিক ও কবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কাঠের গুঁড়ি দিয়ে চেয়ার তৈরির ছবি পোস্ট করার পর স্থানীয় অঙ্গনে শুরু হয়েছে আলোচনা ও ভিন্নমত।

সালেহ আহমদ (স’লিপক) নামের ওই সাংবাদিক ১৪ ডিসেম্বর নিজের ফেসবুক আইডিতে গাছের মোড়া দিয়ে চেয়ার তৈরির তিনটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখেন— “চেয়ার তৈরিতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছি।”
এই পোস্টের পরপরই মৌলভীবাজারসহ সিলেট অঞ্চলে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

স্থানীয়দের অনেকেই জানান, তারা তাকে দীর্ঘদিন ধরে একজন লেখক, কবি ও সংবাদকর্মী হিসেবেই জানতেন। কাঠের কাজ বা আসবাব তৈরির সঙ্গে তার যুক্ত থাকার বিষয়টি তাদের কাছে নতুন।

এ বিষয়ে কবি মিনারা আজমি বলেন,
“ব্যক্তিগতভাবে আমি কখনো শুনিনি বা দেখিনি যে তিনি এই ধরনের কাজে যুক্ত ছিলেন। হঠাৎ এমন একটি পোস্ট অনেকের কাছেই বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। তবে মানুষ যে কোনো সময় নতুন কিছু শিখতে পারে—সেটাও অস্বীকার করার সুযোগ নেই।”

এদিকে মুক্তিবাণী নিউজের সম্পাদক ও প্রকাশক মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন,
“আমি সাধারণত ব্যক্তিগত বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না। তবে একজন সংবাদকর্মী হিসেবে ভিন্নধর্মী কোনো কাজ করাটা অস্বাভাবিক নয়। জীবন ও বাস্তবতা অনেক সময় মানুষকে নতুন পথে নিয়ে যায়।”

অন্যদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তরুণ কবি বলেন,
“সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি যেভাবে আলোচনায় এসেছে, তাতে নানা ধরনের ব্যাখ্যা আসছে। তবে এসবের কোনোটি যাচাইযোগ্য নয়। ব্যক্তি জীবনের সিদ্ধান্ত তার নিজের।” তিনি হয়তো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কাঠমিস্ত্রীর কাজে যোগ দিয়েছেন। হয়তো আমরা জানি না। এটা মন্দ কোন কাজ নয়। বাংলাদেশে আলোচিত-সমালোচিত সাংবাদিক ইলিয়াছ, আমেরিকায় উভার চালিয়ে থাকে।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. জাফর ইকবাল বলেন,
“বাংলাদেশের বাস্তবতায় অনেক সাংবাদিকই সাংবাদিকতার পাশাপাশি অন্য পেশায় যুক্ত হন। শুধুমাত্র সাংবাদিকতা করে সংসার চালানো অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। তাই বিকল্প পেশা গ্রহণ করাটা লজ্জার কিছু নয়।”

তিনি আরও বলেন,
“পরিশ্রম করে কাজ করা সম্মানের। সাংবাদিক হোক বা অন্য কেউ—কেউ যদি নিজের শ্রমে নতুন কিছু করেন, সেটাকে নেতিবাচকভাবে দেখার সুযোগ নেই।”

উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত পোস্ট থেকে সৃষ্ট আলোচনা এখন স্থানীয় পর্যায়ে কৌতূহলের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেননি।