11:27 pm, Sunday, 7 December 2025
চা–শ্রমিকদের উঠান বৈঠক থেকে উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি, আলোচনা-সমালোচনায় প্রার্থীর সহধর্মিণী

নির্বাচনী মৌসুমে সক্রিয়তা—মৌলভীবাজার–৩ আসনে আলোচনায় রেজিনা নাসের

মৌলভীবাজার | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ — রাজনীতিতে একটি প্রচলিত কথা আছে— শীত এলে হাজারো অতিথি পাখি দেখা যায়, আর নির্বাচন এলে দেখা যায় বহু রাজনৈতিক পরিবারের সদস্যদের মাঠে সরব উপস্থিতি। মৌলভীবাজার–৩ আসনেও যেন সেই দৃশ্যই এখন অনেকের আলোচনার বিষয়।
বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এম নাসের রহমানের স্ত্রী ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ–সভাপতি রেজিনা নাসের সম্প্রতি নির্বাচনী মাঠে নেমে সরাসরি প্রচারণায় যুক্ত হয়েছেন। এ নিয়েই চলছে নানা মন্তব্য, বিতর্ক ও আলোচনা।

ধানের শীষে বিজয়ী হলে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি

শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তিনি রাজনগর উপজেলার বিভিন্ন চা বাগানে নারী শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এই সময় তিনি বলেন—

“গত সাড়ে পনেরো বছর এই এলাকায় উন্নয়নের দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন হয়নি। অথচ এই জেলার সবচেয়ে বড় উন্নয়নগুলো হয়েছে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের সময়। রাস্তা, সেতু, কালভার্ট থেকে শুরু করে যে ভিত্তি তৈরি হয়েছিল—তা তাঁরই অবদান।”

তিনি দাবি করেন— ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হলে মৌলভীবাজার–রাজনগরে আবারো বড় ধরনের উন্নয়ন হবে।

চা–শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময়

চা বাগানের নারী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি তাদের সমস্যাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং বলেন—

“আপনাদের কষ্ট, দুঃখ, অভাব—সবই জানি। আপনারা আমাদের পাশে থাকলে, আমরা আপনাদের জন্য কাজ করতে পারব। আপনাদের ভোট আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”

চা–শ্রমিকদের অনেকেই খোলামেলাভাবে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন—
কম মজুরি, চিকিৎসা সুবিধার ঘাটতি, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা—এসব বিষয় নিয়েই তারা আলোচনা করেন।
রেজিনা নাসের এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।

নির্বাচনী মাঠে নতুন মাত্রা

রাজনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুল ইসলাম সেলুনসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে প্রচারণায় অংশ নেন।
মনসুরনগর ইউনিয়ন, টেংরা ও আশেপাশের গ্রামগুলোতে তার উঠান বৈঠক ঘিরে ব্যাপক নারী সমাগম দেখা গেছে।

সমালোচনা ও আলোচনা—নির্বাচনী অতিথি?

স্থানীয় রাজনীতির মাঠে এটাও বলা হচ্ছে—
“নির্বাচনের সময় বড় নেতাদের পরিবারের সদস্যরা মাঠে নামেন, কিন্তু ভোটের পর আর দেখা মেলে না।”
এই ইঙ্গিত করে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন মন্তব্য করছেন।

তবে বিএনপির স্থানীয় নেতারা বলছেন—
রেজিনা নাসের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন, এবার নির্বাচনের সময় তিনি আরও সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছেন মাত্র।

এলাকার নারী ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ

তার প্রচারণায় সবচেয়ে নজর কাড়ছে—যেভাবে তিনি নারী শ্রমিক ও স্থানীয় নারীদের সঙ্গে আলাপ করছেন।
অনেকের মতে, মৌলভীবাজার–৩ আসনে আগে খুব বেশি নারী নেতৃত্ব সামনে না আসায়—এই দৃশ্যটি নির্বাচনী মাঠে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।

শেষ কথা

মৌলভীবাজার–৩ আসনের রাজনীতি সব সময়ই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। এবার প্রার্থীদের পাশাপাশি তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সরাসরি মাঠে নামা প্রতিযোগিতাকে আরও প্রাণবন্ত করছে।
রেজিনা নাসেরের নির্বাচনী প্রচারণা—
একদিকে চা–শ্রমিক ও নারী ভোটারদের আলোচনায় জায়গা করে নিচ্ছে,
অন্যদিকে সমালোচনা ও বিতর্কও সৃষ্টি করছে।

নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে—
এই সক্রিয়তা কতটা প্রভাব ফেলবে—তা এখন ভোটাররাই সিদ্ধান্ত নেবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ৩৭২ শিশু হাফেজের মাধ্যমে ১০০ বার কোরআন খতম

চা–শ্রমিকদের উঠান বৈঠক থেকে উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি, আলোচনা-সমালোচনায় প্রার্থীর সহধর্মিণী

নির্বাচনী মৌসুমে সক্রিয়তা—মৌলভীবাজার–৩ আসনে আলোচনায় রেজিনা নাসের

Update Time : 03:51:36 pm, Sunday, 7 December 2025

মৌলভীবাজার | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ — রাজনীতিতে একটি প্রচলিত কথা আছে— শীত এলে হাজারো অতিথি পাখি দেখা যায়, আর নির্বাচন এলে দেখা যায় বহু রাজনৈতিক পরিবারের সদস্যদের মাঠে সরব উপস্থিতি। মৌলভীবাজার–৩ আসনেও যেন সেই দৃশ্যই এখন অনেকের আলোচনার বিষয়।
বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এম নাসের রহমানের স্ত্রী ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ–সভাপতি রেজিনা নাসের সম্প্রতি নির্বাচনী মাঠে নেমে সরাসরি প্রচারণায় যুক্ত হয়েছেন। এ নিয়েই চলছে নানা মন্তব্য, বিতর্ক ও আলোচনা।

ধানের শীষে বিজয়ী হলে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি

শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তিনি রাজনগর উপজেলার বিভিন্ন চা বাগানে নারী শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এই সময় তিনি বলেন—

“গত সাড়ে পনেরো বছর এই এলাকায় উন্নয়নের দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন হয়নি। অথচ এই জেলার সবচেয়ে বড় উন্নয়নগুলো হয়েছে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের সময়। রাস্তা, সেতু, কালভার্ট থেকে শুরু করে যে ভিত্তি তৈরি হয়েছিল—তা তাঁরই অবদান।”

তিনি দাবি করেন— ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হলে মৌলভীবাজার–রাজনগরে আবারো বড় ধরনের উন্নয়ন হবে।

চা–শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময়

চা বাগানের নারী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি তাদের সমস্যাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং বলেন—

“আপনাদের কষ্ট, দুঃখ, অভাব—সবই জানি। আপনারা আমাদের পাশে থাকলে, আমরা আপনাদের জন্য কাজ করতে পারব। আপনাদের ভোট আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”

চা–শ্রমিকদের অনেকেই খোলামেলাভাবে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন—
কম মজুরি, চিকিৎসা সুবিধার ঘাটতি, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা—এসব বিষয় নিয়েই তারা আলোচনা করেন।
রেজিনা নাসের এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।

নির্বাচনী মাঠে নতুন মাত্রা

রাজনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুল ইসলাম সেলুনসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে প্রচারণায় অংশ নেন।
মনসুরনগর ইউনিয়ন, টেংরা ও আশেপাশের গ্রামগুলোতে তার উঠান বৈঠক ঘিরে ব্যাপক নারী সমাগম দেখা গেছে।

সমালোচনা ও আলোচনা—নির্বাচনী অতিথি?

স্থানীয় রাজনীতির মাঠে এটাও বলা হচ্ছে—
“নির্বাচনের সময় বড় নেতাদের পরিবারের সদস্যরা মাঠে নামেন, কিন্তু ভোটের পর আর দেখা মেলে না।”
এই ইঙ্গিত করে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন মন্তব্য করছেন।

তবে বিএনপির স্থানীয় নেতারা বলছেন—
রেজিনা নাসের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন, এবার নির্বাচনের সময় তিনি আরও সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছেন মাত্র।

এলাকার নারী ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ

তার প্রচারণায় সবচেয়ে নজর কাড়ছে—যেভাবে তিনি নারী শ্রমিক ও স্থানীয় নারীদের সঙ্গে আলাপ করছেন।
অনেকের মতে, মৌলভীবাজার–৩ আসনে আগে খুব বেশি নারী নেতৃত্ব সামনে না আসায়—এই দৃশ্যটি নির্বাচনী মাঠে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।

শেষ কথা

মৌলভীবাজার–৩ আসনের রাজনীতি সব সময়ই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। এবার প্রার্থীদের পাশাপাশি তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সরাসরি মাঠে নামা প্রতিযোগিতাকে আরও প্রাণবন্ত করছে।
রেজিনা নাসেরের নির্বাচনী প্রচারণা—
একদিকে চা–শ্রমিক ও নারী ভোটারদের আলোচনায় জায়গা করে নিচ্ছে,
অন্যদিকে সমালোচনা ও বিতর্কও সৃষ্টি করছে।

নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে—
এই সক্রিয়তা কতটা প্রভাব ফেলবে—তা এখন ভোটাররাই সিদ্ধান্ত নেবেন।