12:16 pm, Sunday, 7 December 2025

শিক্ষকদের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মবিরতি—ভবিষ্যৎ কেড়ে নেওয়ার অপচেষ্টা

  • Reporter Name
  • Update Time : 07:29:13 pm, Saturday, 6 December 2025
  • 23 Time View

ঢাকা | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ —   বার্ষিক পরীক্ষা চলছে—কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সারা বছরের পরিশ্রমের মূল্যায়নের অপেক্ষায়। ঠিক সেই সময় বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে কর্মবিরতি পালন করছে শিক্ষকরা। এতে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থা; বিভ্রান্ত, অসহায় হয়ে পড়েছে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার।
এই অবস্থাকে “চরম দায়িত্বহীনতা ও নৈতিক মূল্যবোধের দেউলিয়াপন” বলে কঠোর সমালোচনা করেছেন মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম মেহেদী হাসান।

তিনি বলেন—

“একজন শিক্ষক যখন বার্ষিক পরীক্ষার সময়ে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলনে যায়—তার হাতে কলম নয়, সে ভবিষ্যৎ জ্বালিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা তুলে দেয়। একজন কোমলমতি ছাত্রের চোখের দিকে তাকিয়ে যে মানুষ কর্মবিরতি দিতে পারে, সে শিক্ষক নয়—এটি শিক্ষকের ছদ্মাবরণে নৈতিকতার খুন।”

তিনি আরও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন—

“১৩ হাজার কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত হয়েছিল ১৯৮২ সালের ব্যাংক আন্দোলনে—তারপর থেকে আর কেউ আন্দোলনের কথা ভাবেনি। অথচ এখনকার কিছু শিক্ষক রাজনৈতিক আর্থিক সুবিধা ও স্বার্থরক্ষায় ছাত্রদের ভবিষ্যৎ বন্ধক রাখছে। এরা জানে না, একটি পরীক্ষায় ব্যাঘাত মানে একটি শিশুর শিক্ষাজীবনে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত!”

তিনি আরও বলেন—

  • “ফ্যাসিবাদী আমলে নিয়োগ পাওয়া কিছু শিক্ষক আজ ভুয়া আন্দোলন করে প্রশাসনকে ব্ল্যাকমেইল করছে।”
  • “যদি ২০২৫ সালে ২০–২৫ হাজার অনৈতিক শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হতো—আজ এদের সাহস হতো না ছাত্রদের ভবিষ্যতের সঙ্গে খেলা করার।”
  • “শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চোখের জলকে যে শিক্ষক মূল্য দিতে জানে না—তার হাতে শিক্ষার দায়িত্ব রাখা আত্মঘাতী।”

মেহেদী হাসান প্রশ্ন তুলেছেন—

“শিক্ষক নামধারীরা কি বুঝতে পারছে না—একদিনের পরীক্ষা বাতিল মানে একটি পরিবারে কী মানসিক চাপ তৈরি হয়? তারা কি বুঝতে পারছে না—এই বন্ধ তালার জন্য একটা শিশু হতাশা, ভয়, অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়?”

তিনি আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন—

“শিক্ষকতা মহান পেশা। এটিকে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির হাতিয়ার যারা বানায়, তারা জাতির শত্রু। শিক্ষা যদি অচল করে দাবি আদায় করতে হয়—তাহলে তারা শিক্ষক নন, স্রেফ স্বার্থলোভী দালাল।”

শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নোংরা খেলা বন্ধের আহ্বান

এস এম মেহেদী হাসান বলেন—

  • “যে কোনো যুক্তিসঙ্গত দাবি শান্তিপূর্ণ ও দায়িত্বশীল উপায়ে জানানো যায়। বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ রেখে নয়।”
  • “এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষকরা শিক্ষাব্যবস্থাকে জিম্মি করছে—এটি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।”

তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে আহ্বান জানিয়ে বলেন—

“অবিলম্বে কড়া ব্যবস্থা নিন। ছাত্রদের আটকে রেখে কোনো দাবি আদায় করতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে বিকল্প শিক্ষক, অ্যাডহক কমিটি, শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত করার বিধান—সবই বিবেচনায় নিতে হবে।”

শেষ কথা

পরীক্ষাকেন্দ্রে তালা ঝোলানো শিক্ষা নয়—এটি শিক্ষার বিরুদ্ধে যুদ্ধ।
এটি কোমলমতি শিশুদের ভবিষ্যৎ বন্ধক রাখা।
এটি একজন শিক্ষকের মর্যাদাহানি।

এস এম মেহেদী হাসানের ভাষায়—

“শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে যে আন্দোলন—তা কখনো শিক্ষকতার আন্দোলন হতে পারে না, হতে পারে শুধু নৈতিকতার পতন।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

শিক্ষকদের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মবিরতি—ভবিষ্যৎ কেড়ে নেওয়ার অপচেষ্টা

শিক্ষকদের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মবিরতি—ভবিষ্যৎ কেড়ে নেওয়ার অপচেষ্টা

Update Time : 07:29:13 pm, Saturday, 6 December 2025

ঢাকা | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ —   বার্ষিক পরীক্ষা চলছে—কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সারা বছরের পরিশ্রমের মূল্যায়নের অপেক্ষায়। ঠিক সেই সময় বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে কর্মবিরতি পালন করছে শিক্ষকরা। এতে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থা; বিভ্রান্ত, অসহায় হয়ে পড়েছে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার।
এই অবস্থাকে “চরম দায়িত্বহীনতা ও নৈতিক মূল্যবোধের দেউলিয়াপন” বলে কঠোর সমালোচনা করেছেন মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম মেহেদী হাসান।

তিনি বলেন—

“একজন শিক্ষক যখন বার্ষিক পরীক্ষার সময়ে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলনে যায়—তার হাতে কলম নয়, সে ভবিষ্যৎ জ্বালিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা তুলে দেয়। একজন কোমলমতি ছাত্রের চোখের দিকে তাকিয়ে যে মানুষ কর্মবিরতি দিতে পারে, সে শিক্ষক নয়—এটি শিক্ষকের ছদ্মাবরণে নৈতিকতার খুন।”

তিনি আরও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন—

“১৩ হাজার কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত হয়েছিল ১৯৮২ সালের ব্যাংক আন্দোলনে—তারপর থেকে আর কেউ আন্দোলনের কথা ভাবেনি। অথচ এখনকার কিছু শিক্ষক রাজনৈতিক আর্থিক সুবিধা ও স্বার্থরক্ষায় ছাত্রদের ভবিষ্যৎ বন্ধক রাখছে। এরা জানে না, একটি পরীক্ষায় ব্যাঘাত মানে একটি শিশুর শিক্ষাজীবনে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত!”

তিনি আরও বলেন—

  • “ফ্যাসিবাদী আমলে নিয়োগ পাওয়া কিছু শিক্ষক আজ ভুয়া আন্দোলন করে প্রশাসনকে ব্ল্যাকমেইল করছে।”
  • “যদি ২০২৫ সালে ২০–২৫ হাজার অনৈতিক শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হতো—আজ এদের সাহস হতো না ছাত্রদের ভবিষ্যতের সঙ্গে খেলা করার।”
  • “শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চোখের জলকে যে শিক্ষক মূল্য দিতে জানে না—তার হাতে শিক্ষার দায়িত্ব রাখা আত্মঘাতী।”

মেহেদী হাসান প্রশ্ন তুলেছেন—

“শিক্ষক নামধারীরা কি বুঝতে পারছে না—একদিনের পরীক্ষা বাতিল মানে একটি পরিবারে কী মানসিক চাপ তৈরি হয়? তারা কি বুঝতে পারছে না—এই বন্ধ তালার জন্য একটা শিশু হতাশা, ভয়, অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়?”

তিনি আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন—

“শিক্ষকতা মহান পেশা। এটিকে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির হাতিয়ার যারা বানায়, তারা জাতির শত্রু। শিক্ষা যদি অচল করে দাবি আদায় করতে হয়—তাহলে তারা শিক্ষক নন, স্রেফ স্বার্থলোভী দালাল।”

শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নোংরা খেলা বন্ধের আহ্বান

এস এম মেহেদী হাসান বলেন—

  • “যে কোনো যুক্তিসঙ্গত দাবি শান্তিপূর্ণ ও দায়িত্বশীল উপায়ে জানানো যায়। বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ রেখে নয়।”
  • “এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষকরা শিক্ষাব্যবস্থাকে জিম্মি করছে—এটি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।”

তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে আহ্বান জানিয়ে বলেন—

“অবিলম্বে কড়া ব্যবস্থা নিন। ছাত্রদের আটকে রেখে কোনো দাবি আদায় করতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে বিকল্প শিক্ষক, অ্যাডহক কমিটি, শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত করার বিধান—সবই বিবেচনায় নিতে হবে।”

শেষ কথা

পরীক্ষাকেন্দ্রে তালা ঝোলানো শিক্ষা নয়—এটি শিক্ষার বিরুদ্ধে যুদ্ধ।
এটি কোমলমতি শিশুদের ভবিষ্যৎ বন্ধক রাখা।
এটি একজন শিক্ষকের মর্যাদাহানি।

এস এম মেহেদী হাসানের ভাষায়—

“শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে যে আন্দোলন—তা কখনো শিক্ষকতার আন্দোলন হতে পারে না, হতে পারে শুধু নৈতিকতার পতন।”