12:16 pm, Sunday, 7 December 2025

পবিপ্রবির ভেটেরিনারি অনুষদে নষ্ট প্রজেক্টর–সাউন্ড সিস্টেম: ক্লাসরুম সংকটে শিক্ষার্থীরা

দুমকী, পটুয়াখালী | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ —  দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি)–এর এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন (এএনএসভিএম) অনুষদের শ্রেণিকক্ষগুলোতে চরম শিক্ষাবান্ধব সংকট দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি অনুষদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ—১৩৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়া সত্ত্বেও, প্রযুক্তিনির্ভর ভেটেরিনারি কোর্স পরিচালনার জন্য অনুষদটিতে নেই কার্যকর মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর এবং কোনো শ্রেণিকক্ষেই নেই সাউন্ড সিস্টেম।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ—অনুষদের অধিকাংশ প্রজেক্টর দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট। সাউন্ড সিস্টেম না থাকায় লেকচার শোনাও কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে মাল্টিমিডিয়া নির্ভর শিক্ষাদান প্রায় অচল হয়ে গেছে। প্রজেক্টর না থাকায় শিক্ষকরা স্লাইড, ডায়াগ্রাম বা ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট ব্যবহার করতে পারছেন না, যা ভেটেরিনারি শিক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পেছনের সারিতে বসা শিক্ষার্থীরা শিক্ষক–কণ্ঠ শুনতে না পাওয়ার ফলে বারবার ভুল বোঝাবুঝি হয়। গ্রীষ্মকালে পরিস্থিতি আরও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে—লেকচারের সময় শব্দ কমাতে ফ্যান বন্ধ রাখতে হয়, এতে ক্লাসরুমে তৈরি হয় অস্বস্তিকর পরিবেশ। শিক্ষার্থীরা বারবার ডিন অফিস ও প্রশাসনকে জানালেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

২১–২২ সেশনের শিক্ষার্থী সাইমুন হাসান বলেন,
“ভেটেরিনারি শিক্ষা প্রযুক্তিনির্ভর। স্লাইড ছাড়া অনেক বিষয় বোঝাই যায় না। কিন্তু অনুষদের বেশিরভাগ প্রজেক্টর নষ্ট থাকায় স্যারদের ক্লাস নিতে সমস্যা হয়। এতে আমাদের শিক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

অন্য শিক্ষার্থী নাজমুল হুদা বলেন,
“সাউন্ড সিস্টেম না থাকায় আমরা লেকচার ঠিকমতো শুনতে পারি না। পিছনে বসলে অর্ধেক বিষয়ই মিস হয়ে যায়। এর ওপর বেশ কিছু ভবনে পানির ব্যবস্থাও নেই—একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটি অত্যন্ত হতাশাজনক।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন,
“প্রজেক্টর সরবরাহের দায়িত্ব আইসিটি সেলের। এর জন্য চাহিদাপত্র দিতে হয়—তা দেওয়া হয়েছে কি না, আমার জানা নেই। চাহিদাপত্র থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাউন্ড সিস্টেম বা ভবনে পানির ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও ডিন অফিস চাহিদা পাঠালে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এএনএসভিএম অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. খোন্দকার জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

শিক্ষার্থীদের দাবি—দ্রুত নষ্ট প্রজেক্টরগুলো মেরামত, সাউন্ড সিস্টেম স্থাপন এবং ভবনগুলোর মৌলিক অবকাঠামো ঠিক করতে হবে। অন্যথায় এই অনুষদের একাডেমিক কার্যক্রম দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

শিক্ষকদের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মবিরতি—ভবিষ্যৎ কেড়ে নেওয়ার অপচেষ্টা

পবিপ্রবির ভেটেরিনারি অনুষদে নষ্ট প্রজেক্টর–সাউন্ড সিস্টেম: ক্লাসরুম সংকটে শিক্ষার্থীরা

Update Time : 06:02:07 pm, Saturday, 6 December 2025

দুমকী, পটুয়াখালী | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ —  দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি)–এর এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন (এএনএসভিএম) অনুষদের শ্রেণিকক্ষগুলোতে চরম শিক্ষাবান্ধব সংকট দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি অনুষদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ—১৩৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়া সত্ত্বেও, প্রযুক্তিনির্ভর ভেটেরিনারি কোর্স পরিচালনার জন্য অনুষদটিতে নেই কার্যকর মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর এবং কোনো শ্রেণিকক্ষেই নেই সাউন্ড সিস্টেম।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ—অনুষদের অধিকাংশ প্রজেক্টর দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট। সাউন্ড সিস্টেম না থাকায় লেকচার শোনাও কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে মাল্টিমিডিয়া নির্ভর শিক্ষাদান প্রায় অচল হয়ে গেছে। প্রজেক্টর না থাকায় শিক্ষকরা স্লাইড, ডায়াগ্রাম বা ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট ব্যবহার করতে পারছেন না, যা ভেটেরিনারি শিক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পেছনের সারিতে বসা শিক্ষার্থীরা শিক্ষক–কণ্ঠ শুনতে না পাওয়ার ফলে বারবার ভুল বোঝাবুঝি হয়। গ্রীষ্মকালে পরিস্থিতি আরও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে—লেকচারের সময় শব্দ কমাতে ফ্যান বন্ধ রাখতে হয়, এতে ক্লাসরুমে তৈরি হয় অস্বস্তিকর পরিবেশ। শিক্ষার্থীরা বারবার ডিন অফিস ও প্রশাসনকে জানালেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

২১–২২ সেশনের শিক্ষার্থী সাইমুন হাসান বলেন,
“ভেটেরিনারি শিক্ষা প্রযুক্তিনির্ভর। স্লাইড ছাড়া অনেক বিষয় বোঝাই যায় না। কিন্তু অনুষদের বেশিরভাগ প্রজেক্টর নষ্ট থাকায় স্যারদের ক্লাস নিতে সমস্যা হয়। এতে আমাদের শিক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

অন্য শিক্ষার্থী নাজমুল হুদা বলেন,
“সাউন্ড সিস্টেম না থাকায় আমরা লেকচার ঠিকমতো শুনতে পারি না। পিছনে বসলে অর্ধেক বিষয়ই মিস হয়ে যায়। এর ওপর বেশ কিছু ভবনে পানির ব্যবস্থাও নেই—একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটি অত্যন্ত হতাশাজনক।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন,
“প্রজেক্টর সরবরাহের দায়িত্ব আইসিটি সেলের। এর জন্য চাহিদাপত্র দিতে হয়—তা দেওয়া হয়েছে কি না, আমার জানা নেই। চাহিদাপত্র থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাউন্ড সিস্টেম বা ভবনে পানির ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও ডিন অফিস চাহিদা পাঠালে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এএনএসভিএম অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. খোন্দকার জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

শিক্ষার্থীদের দাবি—দ্রুত নষ্ট প্রজেক্টরগুলো মেরামত, সাউন্ড সিস্টেম স্থাপন এবং ভবনগুলোর মৌলিক অবকাঠামো ঠিক করতে হবে। অন্যথায় এই অনুষদের একাডেমিক কার্যক্রম দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।