2:14 pm, Sunday, 23 November 2025

১৫ মাসে ২৬ নতুন রাজনৈতিক দল: ‘জনতা’ থেকে ‘সমতা’—দেশের রাজনীতিতে নবজোয়ার

  • Reporter Name
  • Update Time : 12:47:37 pm, Monday, 17 November 2025
  • 70 Time View

ঢাকা | ১৭ নভেম্বর ২০২৫ — গত ১৫ মাসে দেশে রাজনৈতিক পারদপতন লক্ষ্য করা গেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে কমপক্ষে ২৬টি নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে। এর মধ্যে ‘জনতা’ শব্দ ব্যবহার করেছে ছয়টি দল। নতুন দলগুলো সাধারণত জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেছে। তবে কেউ কেউ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিছিল করে নিজেদের পরিচয় দিয়েছে।

২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ সমতা পার্টি। ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ৩০ জনের মতো লোক সমতা পার্টির পোস্টার হাতে ছিলেন। দলের নেতারা জানান, 기존 রাজনৈতিক দলগুলো জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় নতুন দল গঠন অপরিহার্য।

ঠিক এক বছর পর জন্ম নেয় পিপলস পাওয়ার পার্টি, যারা নিজেদের পরিচয় দিয়েছেন ‘সার্বভৌমত্বের প্রহরী’ হিসেবে। ২৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দলের উপদেষ্টা কমিটিতে ১১ জন রয়েছেন।

নতুন দলগুলো সাধারণত সীমিত আর্থিক ও কার্যালয় সংস্থান নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, সমতা পার্টির চেয়ারম্যান হানিফ বাংলাদেশি বলেন, আর্থিক সংকটের কারণে দলের জন্য নিজস্ব কার্যালয় নেই। বাংলাদেশ জনপ্রিয় পার্টির চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সদস্যদের স্বেচ্ছাচন্দ্র চাঁদা এবং ব্যক্তিগত ব্যবসা থেকে দলের খরচ বহন করছেন।

দুটি দলের চেয়ারম্যান প্রবাসী। জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের চেয়ারম্যান জাপান, বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টির চেয়ারম্যান যুক্তরাজ্য থেকে দলের কার্যক্রম দেখছেন।

নতুন দলগুলোর মধ্যে কিছু দলের নাম পরিবর্তনও হয়েছে। যেমন, বাংলাদেশ নিউক্লিয়াস পার্টি পরে নিউক্লিয়াস পার্টি বাংলাদেশ (এনপিবি) নামে রেজিস্ট্রেশন করেছে। ডেসটিনি গ্রুপের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীনের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করা বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টির নাম এক মাস পর পরিবর্তন করে বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন মনে করেন, দেশে এতগুলো নতুন রাজনৈতিক দলের প্রয়োজনীয়তা নেই। নতুন দল গঠনের পেছনে প্রধানত তিনটি কারণ কাজ করছে:

এক. বিগত ১৬ বছরে রাজনৈতিকভাবে বঞ্চিতদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি। দুই. পটপরিবর্তনের পর নতুনভাবে রাজনীতিতে প্রবেশ। তিন. প্রভাব বিস্তার ও দখলদারিত্বের লক্ষ্য।

    নেতা–কর্মীরা জনগণকে তাদের উদ্দেশ্য ও আদর্শ সম্পর্কে সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন। নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশে মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে অর্থ ও কার্যকর কার্যালয় ব্যবস্থাপনা।

    Tag :

    Write Your Comment

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    Save Your Email and Others Information

    About Author Information

    Popular Post

    দ্রব্যমূল্য কমানো ও সর্বস্তরে রেশনিং চালুর দাবি

    ১৫ মাসে ২৬ নতুন রাজনৈতিক দল: ‘জনতা’ থেকে ‘সমতা’—দেশের রাজনীতিতে নবজোয়ার

    Update Time : 12:47:37 pm, Monday, 17 November 2025

    ঢাকা | ১৭ নভেম্বর ২০২৫ — গত ১৫ মাসে দেশে রাজনৈতিক পারদপতন লক্ষ্য করা গেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে কমপক্ষে ২৬টি নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে। এর মধ্যে ‘জনতা’ শব্দ ব্যবহার করেছে ছয়টি দল। নতুন দলগুলো সাধারণত জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেছে। তবে কেউ কেউ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিছিল করে নিজেদের পরিচয় দিয়েছে।

    ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ সমতা পার্টি। ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ৩০ জনের মতো লোক সমতা পার্টির পোস্টার হাতে ছিলেন। দলের নেতারা জানান, 기존 রাজনৈতিক দলগুলো জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় নতুন দল গঠন অপরিহার্য।

    ঠিক এক বছর পর জন্ম নেয় পিপলস পাওয়ার পার্টি, যারা নিজেদের পরিচয় দিয়েছেন ‘সার্বভৌমত্বের প্রহরী’ হিসেবে। ২৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দলের উপদেষ্টা কমিটিতে ১১ জন রয়েছেন।

    নতুন দলগুলো সাধারণত সীমিত আর্থিক ও কার্যালয় সংস্থান নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, সমতা পার্টির চেয়ারম্যান হানিফ বাংলাদেশি বলেন, আর্থিক সংকটের কারণে দলের জন্য নিজস্ব কার্যালয় নেই। বাংলাদেশ জনপ্রিয় পার্টির চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সদস্যদের স্বেচ্ছাচন্দ্র চাঁদা এবং ব্যক্তিগত ব্যবসা থেকে দলের খরচ বহন করছেন।

    দুটি দলের চেয়ারম্যান প্রবাসী। জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের চেয়ারম্যান জাপান, বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টির চেয়ারম্যান যুক্তরাজ্য থেকে দলের কার্যক্রম দেখছেন।

    নতুন দলগুলোর মধ্যে কিছু দলের নাম পরিবর্তনও হয়েছে। যেমন, বাংলাদেশ নিউক্লিয়াস পার্টি পরে নিউক্লিয়াস পার্টি বাংলাদেশ (এনপিবি) নামে রেজিস্ট্রেশন করেছে। ডেসটিনি গ্রুপের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীনের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করা বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টির নাম এক মাস পর পরিবর্তন করে বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি করা হয়।

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন মনে করেন, দেশে এতগুলো নতুন রাজনৈতিক দলের প্রয়োজনীয়তা নেই। নতুন দল গঠনের পেছনে প্রধানত তিনটি কারণ কাজ করছে:

    এক. বিগত ১৬ বছরে রাজনৈতিকভাবে বঞ্চিতদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি। দুই. পটপরিবর্তনের পর নতুনভাবে রাজনীতিতে প্রবেশ। তিন. প্রভাব বিস্তার ও দখলদারিত্বের লক্ষ্য।

      নেতা–কর্মীরা জনগণকে তাদের উদ্দেশ্য ও আদর্শ সম্পর্কে সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন। নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশে মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে অর্থ ও কার্যকর কার্যালয় ব্যবস্থাপনা।