ঢাকা, ১৫ নভেম্বর ২০২৫: নদীমাতৃক বাংলাদেশের শত বছরের নৌ–ঐতিহ্যকে পুনর্জাগরণের লক্ষ্য নিয়ে পর্যটন সার্ভিসে যুক্ত হলো ঐতিহাসিক প্যাডেল স্টিমার ‘পি এস মাহসুদ’। আধুনিকায়ন ও সংস্কার শেষে নৌযানটি আবারও নৌপথে যাত্রার জন্য প্রস্তুত—এরই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হলো শনিবার সকালে।
উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন। উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লুৎফে সিদ্দিকী, সরকারের একাধিক সিনিয়র সচিব, সচিব ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা।
“এটি কেবল স্টিমার নয়, নদী–ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক”—নৌপরিবহন উপদেষ্টা
উদ্বোধনী বক্তব্যে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন—
“প্যাডেল স্টিমার ‘পি এস মাহসুদ’ হবে বাংলাদেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং নদীভিত্তিক পর্যটনের এক অনন্য মেলবন্ধন। আমরা চাই নতুন প্রজন্ম কাছ থেকে দেখুক নদীপথে যোগাযোগের সেই সোনালি ইতিহাস।”
তিনি জানান, আগামী ২১ নভেম্বর শুক্রবার থেকে স্টিমারটি ঢাকা–বরিশাল রুটে পর্যটন সার্ভিস হিসেবে নিয়মিত চলাচল শুরু করবে।
তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস শতবর্ষী স্টিমারটিকে পুনরায় চালুর সিদ্ধান্তে বিশেষ উৎসাহ ও সমর্থন দিয়েছেন।
এছাড়া পি.এস অস্ট্রিচ, পি.এস লেপচা ও পি.এস টার্ন—এই তিনটি পুরোনো স্টিমারও সংস্কারের পরিকল্পনায় রয়েছে।
নৌপরিবহন সচিব: দেশের পর্যটনে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নূরুন্নাহার চৌধুরী এনডিসি বলেন—
“পি এস মাহসুদ চালু হলে দেশি–বিদেশি পর্যটকদের ব্যাপক আকর্ষণ সৃষ্টি হবে। এতে থাকবে ঐতিহ্যবাহী বাংলা খাবার, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও নদীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের বিশেষ আয়োজন।”
ঐতিহাসিক নকশা অক্ষুণ্ণ রেখে আধুনিকতার ছোঁয়া
বিআইডব্লিউটিসির তথ্য অনুযায়ী—
- স্টিমারের মূল কাঠামো ও শতবর্ষী নকশা আগের মতো রাখা হয়েছে
- ইঞ্জিন পুরোপুরি নবায়ন
- আন্তর্জাতিক মানের ফায়ার সেফটি সিস্টেম
- অত্যাধুনিক ডিজিটাল নেভিগেশন
- আরামদায়ক প্রিমিয়াম কেবিন ও পর্যটক–বান্ধব ডেক
- পরিবেশবান্ধব কম ধোঁয়া–নিঃসরণকারী ইঞ্জিন প্রযুক্তি ব্যবহার
স্টিমারের নতুন সময়সূচি
- ঢাকা → বরিশাল: প্রতি শুক্রবার সকাল ৮টা, সদরঘাট থেকে যাত্রা
- বরিশাল → ঢাকা: প্রতি শনিবার
দিনের বেলায় চলার কারণে যাত্রীরা নদীর দুই তীরের সৌন্দর্য ও প্রকৃতি আরও ভালোভাবে উপভোগ করতে পারবেন।
বিআইডব্লিউটিসি মনে করছে, ঐতিহ্য–সংরক্ষণ ও নদী–নির্ভর পর্যটনে এটি হবে বাংলাদেশের এক যুগান্তকারী অধ্যায়।
সম্পাদনায়: এস এম মেহেদী হাসান
Reporter Name 



























