অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল): ঋতু বৈচিত্র আর ষড়ঋতুর দেশ আমাদের বাংলাদেশ। প্রতিটি ঋতুর রয়েছে নিজস্ব রূপ ও বৈচিত্র। এখন আষাঢ়-শ্রাবণ—বর্ষাকাল। প্রকৃতিতে নামছে একটানা বৃষ্টি, আবার মাঝেমধ্যে দেখা দিচ্ছে প্রখর রোদও। এই রোদ-বৃষ্টির অন্যতম সঙ্গী হলো ছাতা।
যাদের পুরনো ছাতা নষ্ট হয়ে গেছে, তারা ছুটছেন মেরামতের কারিগরের কাছে। আবার অনেকে নতুন ছাতা কিনছেন। ফলে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ছাতার কারিগর জলিল মুন্সী এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
ছাতার বাজারে সরগরম
বর্ষা মৌসুম শুরু হতেই ছাতার বাজারে জমে উঠেছে ব্যবসা। পুরনো ছাতাগুলো ঘর থেকে বের করে এনে নতুন করে ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে কারিগরদের কাছে মেরামতের হিড়িক পড়েছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বাজারজুড়ে চলছে ছাতা মেরামতের কাজ। গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ার গ্রামাঞ্চলজুড়ে বিক্রি হচ্ছে দেশি-বিদেশি নানা রঙের ছাতা, শিশুদের জন্যও আছে বাহারি ডিজাইন।
জীবিকার একমাত্র অবলম্বন
ছাতার কারিগর জলিল মুন্সী জানান, তিনি প্রায় ৩০ বছর ধরে ছাতা মেরামত ও তালা–চাবি ঠিক করার কাজ করছেন। প্রতিদিন এই কাজ করে আয় হয় চার থেকে পাঁচ শত টাকা।
তিনি বলেন, “এখন বর্ষা মৌসুম, তাই ছাতা মেরামতের কাজ অনেক বেড়ে গেছে। এই কাজ করেই চলছে আমার সংসার।”
আরেক কারিগর আ. মান্নান বলেন, “সব সময় খুব একটা কাজ থাকে না। ছাতা মেরামতের পাশাপাশি তালা–চাবি ও লাইট সারাইয়ের কাজ করি। এখন বৃষ্টি বাড়ায় কাজও বেড়েছে। তবে ছাতার কাপড়, স্প্রিং, হাতল—সব কিছুর দাম অনেক বেড়েছে, কিন্তু মজুরি আগের মতোই আছে।”
সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা
উপজেলা সদরের বাসিন্দা মো. সৈয়দ তালুকদার বলেন, “বৃষ্টি আর রোদে বাইরে যাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ঘরের দুইটা ছাতা নষ্ট হয়ে পড়েছিল, তাই মেরামত করাতে এনেছি। দুইটা ছাতা সারাতে ৮০ টাকা লেগেছে, নতুন কিনতে গেলে কমপক্ষে ৫–৬ শত টাকা খরচ হতো।”
ছাতা কিনতে আসা আরমান হোসেন বলেন, “আমি চাকরি করি, আমার ছেলে-মেয়ে স্কুল-কলেজে পড়ে। এখন বৃষ্টি আর রোদ দুই-ই আছে, তাই নতুন দুইটা ছাতা ১,১০০ টাকায় কিনেছি।”
বর্ষার এই মৌসুমে আগৈলঝাড়ার ছাতার কারিগররা তাই এখন সময়ের সবচেয়ে ব্যস্ত ও প্রয়োজনীয় মানুষে পরিণত হয়েছেন।
সম্পাদনায়: এস এম মেহেদী হাসান, মোবাইল : ০১৭১১ ৯৩৪৩৫৮
Reporter Name 




























