নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট।।
সীমান্তের বুরুঙ্গাছড়ার কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় খনিজসম্পদ চুনাপাথর ও নুড়িপাথর লুট ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছেন সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। চার রাতে (২১ সেপ্টেম্বর থেকে) ইজারাবিহীন ওই ছড়া থেকে একটি সিন্ডিকেট নির্বিঘ্নে লুটে নিয়েছে স্তূপাকারে থাকা এসব খনিজসম্পদ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তাহিরপুরের ইউএনও মেহেদী হাসান মানিক বলেন, “এ বিষয়ে আমাকে কেউ অবহিত করেনি।”
বৃহস্পতিবার সরেজমিন গেলে একাধিক গণমাধ্যমকর্মীর কাছে এমন অভিযোগ তুলে ধরেন তাহিরপুরের ট্যাকেরঘাট সীমান্তের বুরুঙ্গাছড়া, বড়ছড়াসহ একাধিক সীমান্ত গ্রামের মানুষ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চুনাপাথর ও নুড়িপাথর লুট সিন্ডিকেটের মূল হোতা বড়ছড়া গ্রামের মৃত ধনু মিয়ার ছেলে সীমান্তের পেশাদার চোরাকারবারি আমির আলী, তার ছেলে লিয়াকত, মাটিকাটা গ্রামের দুলা মিয়াসহ আরও ২০–২৫ জন।
বুরুঙ্গাছড়া ও বড়ছড়ার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং সাধারণ মানুষজন জানান, ২১ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার পর থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর ভোর পর্যন্ত ১৮০ থেকে ২০০ ঠেলাগাড়িতে একাধিক ট্রিপে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার মেট্রিক টন চুনাপাথর এবং ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার ঘনফুট নুড়িপাথর লুটে নেওয়া হয়েছে।
প্রতি টন চুনাপাথরের স্থানীয় বাজারমূল্য প্রায় ২৮০০ টাকা এবং প্রতি ঘনফুট নুড়িপাথরের মূল্য ১২০ টাকা। এ হিসেবে চার রাতে প্রায় ৮৪ লাখ থেকে ৯৮ লাখ টাকার চুনাপাথর ও ৬ লাখ থেকে ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকার নুড়িপাথর লুট করা হয়েছে ইজারাবিহীন বুরুঙ্গাছড়া থেকে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, প্রথম ধাপে কয়েকশ শ্রমিক সিন্ডিকেটের পাহারায় ঠেলাগাড়িতে করে খনিজ সরিয়ে নেয়, পরে দক্ষিণ গ্রামের সড়ক পাড়ি দিয়ে কাইমড়া ছড়ার তীরে নিয়ে নৌকায় ভরে নির্বিঘ্নে পাচার করা হয়।
বড়ছড়া গ্রামের আমির আলী বলেন, “অনেকেই চুনাপাথর-নুড়িপাথর নিয়ে গেছে। এক সময় কয়লা-চুনাপাথর চোরাচালানে জড়িত থাকলেও এখন আমি বা আমার ছেলে লিয়াকত এসবের সঙ্গে আর জড়িত নই।”
দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যানের মামা মাটিকাটা গ্রামের দুলা মিয়া বলেন, “আমি চুনাপাথর-নুড়িপাথর লুটের ব্যাপারে কিছুই জানি না।”
একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি নেতা সবুজ আলম বলেন, “আমিও এ ব্যাপারে কিছুই জানি না।”
তাহিরপুর থানার এসআই বদিউজ্জামান বলেন, “পুলিশ সদস্যরা চুনাপাথর বা নুড়িপাথর লুটের সঙ্গে জড়িত নন। আমার চোখে এমন কিছু পড়েনি।”
সুনামগঞ্জ-২৮ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের ট্যাকেরঘাট কোম্পানি হেডকোয়ার্টারের বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার উত্তম কুমার-এর কাছে দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকা থেকে খনিজ লুট বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখন (জুম) মিটিং চলছে, পরে কথা বলব।”
এস এম মেহেদী হাসান 




























