11:31 am, Sunday, 16 November 2025

বিএনপির অনুমোদনহীন অফিস উদ্বোধন: স্থানীয় নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ

বিএনপির অনুমোদনহীন অফিস উদ্বোধন: স্থানীয় নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ

রাজশাহী |০২ আগষ্ট ২০২৫ — রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নে অনুমোদনহীনভাবে বিএনপির একটি কার্যালয় উদ্বোধন নিয়ে দলীয় মহলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উদ্বোধনী আয়োজনে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ কোনো স্থানীয় শীর্ষ নেতার উপস্থিতি না থাকায় প্রশ্ন উঠেছে দলে সমন্বয়হীনতা ও নেতৃত্বহীনতা নিয়ে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকাল ৪টায় বানেশ্বর পেট্রোল পাম্পের উত্তরে ‘৩ নম্বর বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির প্রধান কার্যালয়’ নামে অফিসটি উদ্বোধন করেন প্রয়াত এমপি নাদিম মোস্তফার পুত্র জুলফার নাঈম মোস্তফা বিস্ময়।

“আমাদের না জানিয়ে অফিস উদ্বোধন বেআইনি” — স্থানীয় নেতৃত্ব

ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক হযরত আলী সরকার বলেন,

“আমাদের কোনো অনুমতি বা মতামত ছাড়া এই অফিস চালু করা হয়েছে। এটি বেআইনি ও দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে এর দায়ভার আমরা নেব না।”

সদস্য সচিব আব্দুল মজিদ বলেন,

“আমরা কেউই অফিস উদ্বোধনের বিষয়টি জানতাম না। এটি রাজনৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

স্থানীয় বিএনপি নেতা আলম মেম্বার জানান,

“যারা উদ্বোধনের উদ্যোগ নিয়েছে, তারা কেউই ইউনিয়ন কমিটিতে নেই। যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনিও দলের কোনো পদে নেই।”

উপজেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও জানেন না

পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবু বকর সিদ্দিক স্পষ্টভাবে জানান,

“বাংলাদেশে বিএনপির কোনো ‘প্রধান কার্যালয়’ নামে অফিস অনুমোদিত নয়। এটি বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অফিস উদ্বোধনের এখতিয়ার কেবল আহ্বায়ক কমিটির।”

উদ্যোক্তার দাবি: পুরনো অফিস নতুন করে উদ্বোধন

অফিস উদ্বোধনের অন্যতম উদ্যোক্তা বানেশ্বর বণিক সমিতির আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি বলেন,

“প্রয়াত এমপি নাদিম মোস্তফার ছেলের উদ্যোগে অফিসটি উদ্বোধন করা হয়। দুই দিন আগে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে ফোনে জানানো হয়েছিল। এটি নতুন নয়, দীর্ঘদিন ধরে এখানে দলীয় নেতাকর্মীরা বসতেন। অভিযোগ থাকলে আমরা বিষয়টি বিবেচনা করব।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ও দলের ভাবমূর্তি প্রশ্নে

এ ঘটনাকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ে দ্বন্দ্ব ও সংগঠনিক দুর্বলতার প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন। কেন্দ্রীয় বিএনপি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

— মোহাম্মদ আলী / তাবাসসুম/ সুমন মিয়া

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

মুসফিকুল হক তরফদার আর নেই

বিএনপির অনুমোদনহীন অফিস উদ্বোধন: স্থানীয় নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ

Update Time : 09:26:10 pm, Saturday, 2 August 2025

বিএনপির অনুমোদনহীন অফিস উদ্বোধন: স্থানীয় নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ

রাজশাহী |০২ আগষ্ট ২০২৫ — রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নে অনুমোদনহীনভাবে বিএনপির একটি কার্যালয় উদ্বোধন নিয়ে দলীয় মহলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উদ্বোধনী আয়োজনে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ কোনো স্থানীয় শীর্ষ নেতার উপস্থিতি না থাকায় প্রশ্ন উঠেছে দলে সমন্বয়হীনতা ও নেতৃত্বহীনতা নিয়ে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকাল ৪টায় বানেশ্বর পেট্রোল পাম্পের উত্তরে ‘৩ নম্বর বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির প্রধান কার্যালয়’ নামে অফিসটি উদ্বোধন করেন প্রয়াত এমপি নাদিম মোস্তফার পুত্র জুলফার নাঈম মোস্তফা বিস্ময়।

“আমাদের না জানিয়ে অফিস উদ্বোধন বেআইনি” — স্থানীয় নেতৃত্ব

ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক হযরত আলী সরকার বলেন,

“আমাদের কোনো অনুমতি বা মতামত ছাড়া এই অফিস চালু করা হয়েছে। এটি বেআইনি ও দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে এর দায়ভার আমরা নেব না।”

সদস্য সচিব আব্দুল মজিদ বলেন,

“আমরা কেউই অফিস উদ্বোধনের বিষয়টি জানতাম না। এটি রাজনৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

স্থানীয় বিএনপি নেতা আলম মেম্বার জানান,

“যারা উদ্বোধনের উদ্যোগ নিয়েছে, তারা কেউই ইউনিয়ন কমিটিতে নেই। যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনিও দলের কোনো পদে নেই।”

উপজেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও জানেন না

পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবু বকর সিদ্দিক স্পষ্টভাবে জানান,

“বাংলাদেশে বিএনপির কোনো ‘প্রধান কার্যালয়’ নামে অফিস অনুমোদিত নয়। এটি বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অফিস উদ্বোধনের এখতিয়ার কেবল আহ্বায়ক কমিটির।”

উদ্যোক্তার দাবি: পুরনো অফিস নতুন করে উদ্বোধন

অফিস উদ্বোধনের অন্যতম উদ্যোক্তা বানেশ্বর বণিক সমিতির আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি বলেন,

“প্রয়াত এমপি নাদিম মোস্তফার ছেলের উদ্যোগে অফিসটি উদ্বোধন করা হয়। দুই দিন আগে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে ফোনে জানানো হয়েছিল। এটি নতুন নয়, দীর্ঘদিন ধরে এখানে দলীয় নেতাকর্মীরা বসতেন। অভিযোগ থাকলে আমরা বিষয়টি বিবেচনা করব।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ও দলের ভাবমূর্তি প্রশ্নে

এ ঘটনাকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ে দ্বন্দ্ব ও সংগঠনিক দুর্বলতার প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন। কেন্দ্রীয় বিএনপি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

— মোহাম্মদ আলী / তাবাসসুম/ সুমন মিয়া