12:45 pm, Sunday, 23 November 2025

পাটগ্রাম সীমান্তে বারবার ভারতীয় ড্রোন অনুপ্রবেশ, চরম উত্তেজনা স্থানীয়দের মাঝে

পাটগ্রাম সীমান্তে বারবার ভারতীয় ড্রোন অনুপ্রবেশ, চরম উত্তেজনা স্থানীয়দের মাঝে

লালমনিরহাট | ০১ আগষ্ট ২০২৫  — লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ধবলসুতী সীমান্তে ভারতীয় ড্রোনের একাধিকবার অনুপ্রবেশে সীমান্তজুড়ে দেখা দিয়েছে চরম উদ্বেগ ও উত্তেজনা। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, বিএসএফ কর্তৃক নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের আকাশসীমায় ড্রোন পাঠিয়ে গোপনে ভিডিও ও ছবি ধারণ করা হচ্ছে, যা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।

বারবার ড্রোন প্রবেশ, কিন্তু ব্যবস্থা নেই

সূত্রমতে, গত ৩১ জুলাই সকাল ১০টার দিকে ভারতের ফুলকা ডাবরি বিএসএফ ক্যাম্প থেকে একটি ড্রোন উড়িয়ে বাংলাদেশের ৮২৯ নম্বর সীমান্ত পিলার অতিক্রম করে ধবলসুতী এলাকায় ঢুকে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ড্রোনটি কয়েকবার বাংলাদেশের ভেতরে চক্কর দিয়ে আবার ফিরে যায়।

সীমান্তবাসীর অভিযোগ

স্থানীয়দের ভাষ্যে, এই ঘটনা নতুন নয়। গত ১০ দিন ধরেই একইভাবে ড্রোন আসছে, কিন্তু বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এ বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরেছেন স্থানীয় যুবক শামীম আল মারুফ। তিনি লিখেছেন:

“ভারতীয় ক্যাম্প ফুলকা ডাবরি থেকে ড্রোন ক্যামেরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে ভিডিও করে নিয়ে যায়। এটা নতুন না, বারবার হচ্ছে। কিন্তু প্রমাণ না থাকায় বিজিবি কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।”

তিনি বিজিবির কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “আমরা চাই, আর কোনো ভারতীয় ড্রোন যেন আমাদের দেশের ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে।”

এক তরুণ সীমান্তবাসী বলেন:

“প্রতিদিন বৈদ্যুতিক খুঁটির আলো আর ড্রোনের শব্দে আতঙ্কে থাকি। সরকার ব্যবস্থা না নিলে আমরা নিজেরাই প্রতিবাদে নামব।”

সীমান্তে আলো নিয়েও ক্ষোভ

ড্রোন ছাড়াও ভারতীয় সীমান্তে বসানো বৈদ্যুতিক ল্যাম্পপোস্ট নিয়েও স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে। জিরো লাইনের মাত্র ৫০ গজের মধ্যে বসানো এই লাইটের কারণে রাতের বেলা তীব্র আলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়ে। এতে ফসলের ক্ষতি, জনজীবনে বিঘ্ন এবং নিরাপত্তা হুমকির আশঙ্কা করছেন তারা।

ইউপি সদস্য ও প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

পাটগ্রাম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তবিবর রহমান জানান, “বিজিবি আগেই জানত ভারত ড্রোন পাঠায়। আগের ক্যাম্প কমান্ডার নিজেই আমাদের বলেছিলেন এই বিষয়ে।”

এ বিষয়ে ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করেননি।

পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ বলেন:

“ভারতীয় ড্রোন বাংলাদেশ সীমান্তে ওড়ানো হচ্ছে বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। আমি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।”

— কল্লোল আহমেদ / তাবাসসুম/ সালেহ

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

দ্রব্যমূল্য কমানো ও সর্বস্তরে রেশনিং চালুর দাবি

পাটগ্রাম সীমান্তে বারবার ভারতীয় ড্রোন অনুপ্রবেশ, চরম উত্তেজনা স্থানীয়দের মাঝে

Update Time : 04:47:22 pm, Friday, 1 August 2025
পাটগ্রাম সীমান্তে বারবার ভারতীয় ড্রোন অনুপ্রবেশ, চরম উত্তেজনা স্থানীয়দের মাঝে

লালমনিরহাট | ০১ আগষ্ট ২০২৫  — লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ধবলসুতী সীমান্তে ভারতীয় ড্রোনের একাধিকবার অনুপ্রবেশে সীমান্তজুড়ে দেখা দিয়েছে চরম উদ্বেগ ও উত্তেজনা। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, বিএসএফ কর্তৃক নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের আকাশসীমায় ড্রোন পাঠিয়ে গোপনে ভিডিও ও ছবি ধারণ করা হচ্ছে, যা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।

বারবার ড্রোন প্রবেশ, কিন্তু ব্যবস্থা নেই

সূত্রমতে, গত ৩১ জুলাই সকাল ১০টার দিকে ভারতের ফুলকা ডাবরি বিএসএফ ক্যাম্প থেকে একটি ড্রোন উড়িয়ে বাংলাদেশের ৮২৯ নম্বর সীমান্ত পিলার অতিক্রম করে ধবলসুতী এলাকায় ঢুকে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ড্রোনটি কয়েকবার বাংলাদেশের ভেতরে চক্কর দিয়ে আবার ফিরে যায়।

সীমান্তবাসীর অভিযোগ

স্থানীয়দের ভাষ্যে, এই ঘটনা নতুন নয়। গত ১০ দিন ধরেই একইভাবে ড্রোন আসছে, কিন্তু বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এ বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরেছেন স্থানীয় যুবক শামীম আল মারুফ। তিনি লিখেছেন:

“ভারতীয় ক্যাম্প ফুলকা ডাবরি থেকে ড্রোন ক্যামেরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে ভিডিও করে নিয়ে যায়। এটা নতুন না, বারবার হচ্ছে। কিন্তু প্রমাণ না থাকায় বিজিবি কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।”

তিনি বিজিবির কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “আমরা চাই, আর কোনো ভারতীয় ড্রোন যেন আমাদের দেশের ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে।”

এক তরুণ সীমান্তবাসী বলেন:

“প্রতিদিন বৈদ্যুতিক খুঁটির আলো আর ড্রোনের শব্দে আতঙ্কে থাকি। সরকার ব্যবস্থা না নিলে আমরা নিজেরাই প্রতিবাদে নামব।”

সীমান্তে আলো নিয়েও ক্ষোভ

ড্রোন ছাড়াও ভারতীয় সীমান্তে বসানো বৈদ্যুতিক ল্যাম্পপোস্ট নিয়েও স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে। জিরো লাইনের মাত্র ৫০ গজের মধ্যে বসানো এই লাইটের কারণে রাতের বেলা তীব্র আলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়ে। এতে ফসলের ক্ষতি, জনজীবনে বিঘ্ন এবং নিরাপত্তা হুমকির আশঙ্কা করছেন তারা।

ইউপি সদস্য ও প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

পাটগ্রাম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তবিবর রহমান জানান, “বিজিবি আগেই জানত ভারত ড্রোন পাঠায়। আগের ক্যাম্প কমান্ডার নিজেই আমাদের বলেছিলেন এই বিষয়ে।”

এ বিষয়ে ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করেননি।

পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ বলেন:

“ভারতীয় ড্রোন বাংলাদেশ সীমান্তে ওড়ানো হচ্ছে বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। আমি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।”

— কল্লোল আহমেদ / তাবাসসুম/ সালেহ