12:45 pm, Sunday, 23 November 2025

নাহিদের বক্তব্যের কড়া জবাব দিলেন সাদিক কায়েম

নাহিদের বক্তব্যের কড়া জবাব দিলেন সাদিক কায়েম

ঢাকা | ৩১ জুলাই ২০২৫  — জুলাই বিপ্লব নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের ফেসবুক পোস্টের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা চলছে”, এবং “এটা মেনে নেওয়া যায় না।”

‘জুলাই বিপ্লব ছিল আপামর জনতার বিস্ফোরণ’

সাদিক কায়েম তার বক্তব্যে স্পষ্ট করেন, “জুলাই বিপ্লব ছিল আপামর জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বিস্ফোরণ। এখানে মতভেদ ভুলে সবাই একটি কমন লক্ষ্য—ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের জন্য একত্রিত হয়েছিল। শহীদ ও গাজীদের আত্মত্যাগ ছাড়া সেই আন্দোলনের কোনো বাস্তবতা নেই।”

তিনি আরও বলেন, “আমি যতবার বক্তব্য দিয়েছি, সবসময় শহীদদের ও গাজীদেরই মূল নায়ক হিসেবে চিহ্নিত করেছি। নিজের কোনো ভূমিকা জোর করে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করিনি।”

সমন্বয়ক পরিচয় ও দখল রাজনীতি নিয়ে ক্ষোভ

নাহিদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমি কখনো ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে কিছু দখল বা আত্মসাৎ করিনি। কেউ যদি একটিও প্রমাণ দেখাতে পারে—আমি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছি।”

সাদিক দাবি করেন, ১৯ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে প্রথম সারির অনেক সমন্বয়ক ছিলেন না। ফলে তিনি পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার দায়িত্ব পালন করেছেন—ফরমেশন গঠন, মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ, নয় দফার প্রচার ইত্যাদি।

‘চেতনার ব্যবসা’ নিয়ে কঠোর মন্তব্য

সাদিক কায়েম কড়া ভাষায় বলেন, “জুলাইকে পকেটবন্দী করা, এটিকে নিয়ে চাঁদাবাজি করা বা রাজনীতি করা—এটা অনৈতিক। আমরা এ ধরনের কর্মকাণ্ডে নেই। যারা করছেন, তারা শহীদের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন।”

তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা শহীদদের আকাঙ্ক্ষা ও স্পিরিটকে সামনে রেখে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে কাজ করছি। কেউ যদি এ নিয়ে ব্যবসা করতে চায়, তবে তার বিরুদ্ধেও আন্দোলন চলবে।”

বিভাজনের আশঙ্কা ও সতর্কবার্তা

সাদিক কায়েম বলেন, “এখনকার কিছু বয়ান সবাইকে ব্যথিত করছে, বিভাজন তৈরি করছে। আমাদের যোদ্ধারা এখন দায়িত্বশীল অবস্থানে—তাদের দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত।”

তিনি অভিযোগ করেন, অনেকেই জুলাইয়ের সময় আত্মগোপনে ছিলেন, কেউ ‘গুম নাটক’ করেছেন, কেউ আবার আন্দোলন ম্যানেজ করে ক্যাম্পাস খোলার চেষ্টা করেছেন—এরপরেই তারা ‘মহাবিপ্লবী’ সেজেছেন।

ঐতিহাসিক দায় স্মরণ করিয়ে দিলেন কায়েম

বক্তব্যের শেষদিকে তিনি বলেন, “ইতিহাস বিকৃতি রোধে সত্যকে সামনে আনতেই হবে। না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিভ্রান্ত হবে।”

— এস এম মেহেদী হাসান / তাবাসসুম/ সালেহ

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

দ্রব্যমূল্য কমানো ও সর্বস্তরে রেশনিং চালুর দাবি

নাহিদের বক্তব্যের কড়া জবাব দিলেন সাদিক কায়েম

Update Time : 08:05:22 pm, Thursday, 31 July 2025

নাহিদের বক্তব্যের কড়া জবাব দিলেন সাদিক কায়েম

ঢাকা | ৩১ জুলাই ২০২৫  — জুলাই বিপ্লব নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের ফেসবুক পোস্টের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা চলছে”, এবং “এটা মেনে নেওয়া যায় না।”

‘জুলাই বিপ্লব ছিল আপামর জনতার বিস্ফোরণ’

সাদিক কায়েম তার বক্তব্যে স্পষ্ট করেন, “জুলাই বিপ্লব ছিল আপামর জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বিস্ফোরণ। এখানে মতভেদ ভুলে সবাই একটি কমন লক্ষ্য—ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের জন্য একত্রিত হয়েছিল। শহীদ ও গাজীদের আত্মত্যাগ ছাড়া সেই আন্দোলনের কোনো বাস্তবতা নেই।”

তিনি আরও বলেন, “আমি যতবার বক্তব্য দিয়েছি, সবসময় শহীদদের ও গাজীদেরই মূল নায়ক হিসেবে চিহ্নিত করেছি। নিজের কোনো ভূমিকা জোর করে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করিনি।”

সমন্বয়ক পরিচয় ও দখল রাজনীতি নিয়ে ক্ষোভ

নাহিদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমি কখনো ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে কিছু দখল বা আত্মসাৎ করিনি। কেউ যদি একটিও প্রমাণ দেখাতে পারে—আমি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছি।”

সাদিক দাবি করেন, ১৯ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে প্রথম সারির অনেক সমন্বয়ক ছিলেন না। ফলে তিনি পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার দায়িত্ব পালন করেছেন—ফরমেশন গঠন, মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ, নয় দফার প্রচার ইত্যাদি।

‘চেতনার ব্যবসা’ নিয়ে কঠোর মন্তব্য

সাদিক কায়েম কড়া ভাষায় বলেন, “জুলাইকে পকেটবন্দী করা, এটিকে নিয়ে চাঁদাবাজি করা বা রাজনীতি করা—এটা অনৈতিক। আমরা এ ধরনের কর্মকাণ্ডে নেই। যারা করছেন, তারা শহীদের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন।”

তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা শহীদদের আকাঙ্ক্ষা ও স্পিরিটকে সামনে রেখে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে কাজ করছি। কেউ যদি এ নিয়ে ব্যবসা করতে চায়, তবে তার বিরুদ্ধেও আন্দোলন চলবে।”

বিভাজনের আশঙ্কা ও সতর্কবার্তা

সাদিক কায়েম বলেন, “এখনকার কিছু বয়ান সবাইকে ব্যথিত করছে, বিভাজন তৈরি করছে। আমাদের যোদ্ধারা এখন দায়িত্বশীল অবস্থানে—তাদের দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত।”

তিনি অভিযোগ করেন, অনেকেই জুলাইয়ের সময় আত্মগোপনে ছিলেন, কেউ ‘গুম নাটক’ করেছেন, কেউ আবার আন্দোলন ম্যানেজ করে ক্যাম্পাস খোলার চেষ্টা করেছেন—এরপরেই তারা ‘মহাবিপ্লবী’ সেজেছেন।

ঐতিহাসিক দায় স্মরণ করিয়ে দিলেন কায়েম

বক্তব্যের শেষদিকে তিনি বলেন, “ইতিহাস বিকৃতি রোধে সত্যকে সামনে আনতেই হবে। না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিভ্রান্ত হবে।”

— এস এম মেহেদী হাসান / তাবাসসুম/ সালেহ