12:31 pm, Sunday, 23 November 2025

পূর্ব লন্ডনে স্মারকগ্রন্থ ‘কালের অভিজ্ঞান’-এর মোড়ক উন্মোচন: সিলেট অঞ্চলের সরপঞ্চ ঐতিহ্যের ইতিহাস তুলে ধরা

পূর্ব লন্ডনে স্মারকগ্রন্থ ‘কালের অভিজ্ঞান’-এর মোড়ক উন্মোচন: সিলেট অঞ্চলের সরপঞ্চ ঐতিহ্যের ইতিহাস তুলে ধরা

লন্ডন, যুক্তরাজ্য | ২৯ জুলাই ২০২৫  — ব্রিটেনের পূর্ব লন্ডনে অনুষ্ঠিত হলো একটি ঐতিহাসিক গবেষণাগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান। “কালের অভিজ্ঞান”—শিরোনামের এই স্মারকগ্রন্থে স্থান পেয়েছে বৃহত্তর শ্রীহট্ট তথা সিলেট জেলার পঞ্চায়েত ব্যবস্থা, সরপঞ্চ ঐতিহ্য এবং ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে স্থানীয় নেতাদের অবদান।

সোমবার (২৮ জুলাই) পূর্ব লন্ডনের ভ্যালেন্স রোডের বাংলার স্বাদ রেস্টুরেন্টে আয়োজিত মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন লেখক ও গবেষক শাহ আতিকুল হক কামালী। প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, লেখক-গবেষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গৌস সুলতান। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ইউকে বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি ড. আনসার আহমেদ উল্লাহ

ঐতিহাসিক পটভূমি ও গ্রন্থের গুরুত্ব

স্মারকগ্রন্থ ‘কালের অভিজ্ঞান’ একাধারে গবেষণাধর্মী ও ঐতিহাসিক দলিল। এতে মোগল আমল থেকে শুরু করে পাকিস্তান আমলের (১৯৫৮ পর্যন্ত) সিলেট অঞ্চলের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সার্কেল পদ্ধতি, পরগনা কাঠামো এবং সরপঞ্চদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গ্রন্থটিতে ১২০ জন সরপঞ্চ ও সহকারী সরপঞ্চের সংক্ষিপ্ত জীবনী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বিশেষভাবে আলোচনায় এসেছে নবীগঞ্জ থানার ৩৯নং সার্কেল পঞ্চায়েতের সহোদর সরপঞ্চ—শ্রীমান সনাতন দাসশ্রীমান দীননাথ দাস, যাঁরা ব্রিটিশ বিরোধী স্বদেশী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন।

গ্রন্থ পাঠ ও আলোচনা পর্ব

অনুষ্ঠানে গ্রন্থ থেকে বিশেষ পাঠ উপস্থাপন করেন:

  • বাচিকশিল্পী মুনিরা পারভিন — সরপঞ্চ অধ্যায়

  • কবি স্মৃতি আজাদ — শ্রীহট্টের রাজস্ব জিলা ও পরগনা অধ্যায়

  • মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া — সম্পাদকীয় অংশ

মূল আলোচক ছিলেন গবেষক ফারুক আহমদ, ইতিহাসবিদ ডা. গিয়াস উদ্দিন আহমদ, এবং বাংলাদেশ থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হওয়া কবি হাসিবা মুন

অতিরিক্ত আলোচনায় অংশ নেন: আকিকুর রহমান (টাওয়ার হ্যামলেটসের সাবেক মেয়র), সাংবাদিক আজিজুল আম্বিয়া, লেখক দেলওয়ার রহমান চৌধুরী, সাংবাদিক সেজু মিয়া, কবি মুজিবুল হক মনি, নারী নেত্রী আনজুমান আরা আঞ্জু, গবেষক নোমান আহমদ প্রমুখ।

👉 “নায়িকার বিয়ে করার ইচ্ছা 'ভালো হুজুরকে’ — মিথ্যাবাদী ইমামদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন সাংবাদিক!”

সম্পাদনা ও প্রকাশনার তথ্য

গ্রন্থটির প্রধান সম্পাদক:

  • মতিয়ার চৌধুরী – সাংবাদিক ও গবেষক

সহসম্পাদক পর্ষদ: শাহ আতিকুল হক কামালী, মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, সামসুল আমিন, জার্নেল চৌধুরী, মুজিবুর রহমান মুজিব, রত্নদীপ দাস রাজু।

বিশেষ লেখক হিসেবে গ্রন্থে স্থান পেয়েছে: সাংবাদিক আল আজাদ, গবেষক মনোজ বিকাশ দেবরায়, শতবর্ষী ব্যক্তি মুকুন্দ্র চন্দ্র দাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা রবীন্দ্র চন্দ্র দাস, শিশু সাহিত্যিক পৃথ্বীশ চক্রবর্তী।

গ্রন্থের ভূমিকা লিখেছেন:

  • ড. শরদিন্দু ভট্টাচার্য, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, বাংলা বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান: গাঁঙুড় প্রকাশন, সিলেট, প্রকাশক: অসীম সরকার

গ্রন্থের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য

আলোচকরা বলেন, “এই গ্রন্থ শুধু ইতিহাস নয়, বরং বৃহত্তর শ্রীহট্ট অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ও প্রশাসনিক ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল। মোগল থেকে ব্রিটিশ এবং পাকিস্তান আমলের প্রশাসনিক বিবর্তন, সরপঞ্চ ব্যবস্থার সামাজিক গুরুত্ব এবং স্থানীয় নেতৃত্বের ঐতিহাসিক ভূমিকাকে মূল্যায়ন করেছে এই গ্রন্থ।”

— মোঃ সালেহ আহমদ / তাবাসসুম/ এস এম মেহেদী

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

দ্রব্যমূল্য কমানো ও সর্বস্তরে রেশনিং চালুর দাবি

পূর্ব লন্ডনে স্মারকগ্রন্থ ‘কালের অভিজ্ঞান’-এর মোড়ক উন্মোচন: সিলেট অঞ্চলের সরপঞ্চ ঐতিহ্যের ইতিহাস তুলে ধরা

Update Time : 06:18:19 pm, Tuesday, 29 July 2025

পূর্ব লন্ডনে স্মারকগ্রন্থ ‘কালের অভিজ্ঞান’-এর মোড়ক উন্মোচন: সিলেট অঞ্চলের সরপঞ্চ ঐতিহ্যের ইতিহাস তুলে ধরা

লন্ডন, যুক্তরাজ্য | ২৯ জুলাই ২০২৫  — ব্রিটেনের পূর্ব লন্ডনে অনুষ্ঠিত হলো একটি ঐতিহাসিক গবেষণাগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান। “কালের অভিজ্ঞান”—শিরোনামের এই স্মারকগ্রন্থে স্থান পেয়েছে বৃহত্তর শ্রীহট্ট তথা সিলেট জেলার পঞ্চায়েত ব্যবস্থা, সরপঞ্চ ঐতিহ্য এবং ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে স্থানীয় নেতাদের অবদান।

সোমবার (২৮ জুলাই) পূর্ব লন্ডনের ভ্যালেন্স রোডের বাংলার স্বাদ রেস্টুরেন্টে আয়োজিত মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন লেখক ও গবেষক শাহ আতিকুল হক কামালী। প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, লেখক-গবেষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গৌস সুলতান। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ইউকে বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি ড. আনসার আহমেদ উল্লাহ

ঐতিহাসিক পটভূমি ও গ্রন্থের গুরুত্ব

স্মারকগ্রন্থ ‘কালের অভিজ্ঞান’ একাধারে গবেষণাধর্মী ও ঐতিহাসিক দলিল। এতে মোগল আমল থেকে শুরু করে পাকিস্তান আমলের (১৯৫৮ পর্যন্ত) সিলেট অঞ্চলের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সার্কেল পদ্ধতি, পরগনা কাঠামো এবং সরপঞ্চদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গ্রন্থটিতে ১২০ জন সরপঞ্চ ও সহকারী সরপঞ্চের সংক্ষিপ্ত জীবনী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বিশেষভাবে আলোচনায় এসেছে নবীগঞ্জ থানার ৩৯নং সার্কেল পঞ্চায়েতের সহোদর সরপঞ্চ—শ্রীমান সনাতন দাসশ্রীমান দীননাথ দাস, যাঁরা ব্রিটিশ বিরোধী স্বদেশী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন।

গ্রন্থ পাঠ ও আলোচনা পর্ব

অনুষ্ঠানে গ্রন্থ থেকে বিশেষ পাঠ উপস্থাপন করেন:

  • বাচিকশিল্পী মুনিরা পারভিন — সরপঞ্চ অধ্যায়

  • কবি স্মৃতি আজাদ — শ্রীহট্টের রাজস্ব জিলা ও পরগনা অধ্যায়

  • মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া — সম্পাদকীয় অংশ

মূল আলোচক ছিলেন গবেষক ফারুক আহমদ, ইতিহাসবিদ ডা. গিয়াস উদ্দিন আহমদ, এবং বাংলাদেশ থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হওয়া কবি হাসিবা মুন

অতিরিক্ত আলোচনায় অংশ নেন: আকিকুর রহমান (টাওয়ার হ্যামলেটসের সাবেক মেয়র), সাংবাদিক আজিজুল আম্বিয়া, লেখক দেলওয়ার রহমান চৌধুরী, সাংবাদিক সেজু মিয়া, কবি মুজিবুল হক মনি, নারী নেত্রী আনজুমান আরা আঞ্জু, গবেষক নোমান আহমদ প্রমুখ।

👉 “নায়িকার বিয়ে করার ইচ্ছা 'ভালো হুজুরকে’ — মিথ্যাবাদী ইমামদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন সাংবাদিক!”

সম্পাদনা ও প্রকাশনার তথ্য

গ্রন্থটির প্রধান সম্পাদক:

  • মতিয়ার চৌধুরী – সাংবাদিক ও গবেষক

সহসম্পাদক পর্ষদ: শাহ আতিকুল হক কামালী, মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, সামসুল আমিন, জার্নেল চৌধুরী, মুজিবুর রহমান মুজিব, রত্নদীপ দাস রাজু।

বিশেষ লেখক হিসেবে গ্রন্থে স্থান পেয়েছে: সাংবাদিক আল আজাদ, গবেষক মনোজ বিকাশ দেবরায়, শতবর্ষী ব্যক্তি মুকুন্দ্র চন্দ্র দাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা রবীন্দ্র চন্দ্র দাস, শিশু সাহিত্যিক পৃথ্বীশ চক্রবর্তী।

গ্রন্থের ভূমিকা লিখেছেন:

  • ড. শরদিন্দু ভট্টাচার্য, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, বাংলা বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান: গাঁঙুড় প্রকাশন, সিলেট, প্রকাশক: অসীম সরকার

গ্রন্থের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য

আলোচকরা বলেন, “এই গ্রন্থ শুধু ইতিহাস নয়, বরং বৃহত্তর শ্রীহট্ট অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ও প্রশাসনিক ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল। মোগল থেকে ব্রিটিশ এবং পাকিস্তান আমলের প্রশাসনিক বিবর্তন, সরপঞ্চ ব্যবস্থার সামাজিক গুরুত্ব এবং স্থানীয় নেতৃত্বের ঐতিহাসিক ভূমিকাকে মূল্যায়ন করেছে এই গ্রন্থ।”

— মোঃ সালেহ আহমদ / তাবাসসুম/ এস এম মেহেদী