2:14 pm, Sunday, 23 November 2025

সরকারি আদেশ অমান্য করলেই চাকরিচ্যুতি: নতুন অধ্যাদেশে কঠোর শাস্তির বিধান

সরকারি আদেশ অমান্য করলেই চাকরিচ্যুতি: নতুন অধ্যাদেশে কঠোর শাস্তির বিধান

ঢাকা | ২৪ জুলাই ২০২৫  — 

সরকারি কর্মচারীদের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে সরকার জারি করেছে ‘সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’। এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বৈধ আদেশ অমান্য করলে কিংবা বাস্তবায়নে বাধা দিলে সরকারি কর্মচারীকে চাকরিচ্যুতি পর্যন্ত শাস্তি দেওয়া যাবে।

২৩ জুলাই রাতে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে অধ্যাদেশটি জারি হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

কোন কোন অপরাধে চাকরি যাবে?

নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, নিম্নোক্ত আচরণগুলো সরকারি চাকরির শৃঙ্খলা ভঙ্গের আওতায় পড়বে:

  • বৈধ আদেশ, পরিপত্র বা নির্দেশ অমান্য করা

  • বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করা

  • অন্যকে প্ররোচিত করা

  • ছুটি বা যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া অনুপস্থিত থাকা

  • অন্য কর্মচারীদের কাজে বাধা দেওয়া

এসব ক্ষেত্রে কর্মচারীর বিরুদ্ধে অবনমন, বাধ্যতামূলক অবসর, কিংবা চাকরিচ্যুতির মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

তদন্ত ও আপিল প্রক্রিয়া

অভিযোগ গঠনের ৭ কর্মদিবসের মধ্যে অভিযুক্তকে নোটিশ দিতে হবে। তদন্ত কমিটি হবে তিন সদস্যের, যাদের সবাই অভিযুক্তের চেয়ে পদে জ্যেষ্ঠ হবেন। অভিযুক্ত যদি নারী হন, কমিটিতে একজন নারী সদস্য রাখাও বাধ্যতামূলক।

কমিটিকে ১৪ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে হবে। একবারের জন্য ৭ দিনের অতিরিক্ত সময় অনুমোদনযোগ্য। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন না দিতে পারলে সেটি কমিটির অদক্ষতা হিসেবে বিবেচিত হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।

আপিল ও পুনর্বিবেচনা

দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে অভিযুক্ত ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে আপিল করতে পারবেন। তবে রাষ্ট্রপতির আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিল গ্রহণযোগ্য নয়। সে ক্ষেত্রে কেবল আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করা যাবে।

উপসংহার

২০২৫ সালের এই অধ্যাদেশ সরকারি কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে আরও জবাবদিহিমূলক করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। চাকরির নিরাপত্তার পাশাপাশি প্রশাসনিক শৃঙ্খলা রক্ষায় এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেও তারা মনে করেন।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

দ্রব্যমূল্য কমানো ও সর্বস্তরে রেশনিং চালুর দাবি

সরকারি আদেশ অমান্য করলেই চাকরিচ্যুতি: নতুন অধ্যাদেশে কঠোর শাস্তির বিধান

Update Time : 05:55:28 pm, Thursday, 24 July 2025

সরকারি আদেশ অমান্য করলেই চাকরিচ্যুতি: নতুন অধ্যাদেশে কঠোর শাস্তির বিধান

ঢাকা | ২৪ জুলাই ২০২৫  — 

সরকারি কর্মচারীদের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে সরকার জারি করেছে ‘সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’। এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বৈধ আদেশ অমান্য করলে কিংবা বাস্তবায়নে বাধা দিলে সরকারি কর্মচারীকে চাকরিচ্যুতি পর্যন্ত শাস্তি দেওয়া যাবে।

২৩ জুলাই রাতে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে অধ্যাদেশটি জারি হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

কোন কোন অপরাধে চাকরি যাবে?

নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, নিম্নোক্ত আচরণগুলো সরকারি চাকরির শৃঙ্খলা ভঙ্গের আওতায় পড়বে:

  • বৈধ আদেশ, পরিপত্র বা নির্দেশ অমান্য করা

  • বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করা

  • অন্যকে প্ররোচিত করা

  • ছুটি বা যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া অনুপস্থিত থাকা

  • অন্য কর্মচারীদের কাজে বাধা দেওয়া

এসব ক্ষেত্রে কর্মচারীর বিরুদ্ধে অবনমন, বাধ্যতামূলক অবসর, কিংবা চাকরিচ্যুতির মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

তদন্ত ও আপিল প্রক্রিয়া

অভিযোগ গঠনের ৭ কর্মদিবসের মধ্যে অভিযুক্তকে নোটিশ দিতে হবে। তদন্ত কমিটি হবে তিন সদস্যের, যাদের সবাই অভিযুক্তের চেয়ে পদে জ্যেষ্ঠ হবেন। অভিযুক্ত যদি নারী হন, কমিটিতে একজন নারী সদস্য রাখাও বাধ্যতামূলক।

কমিটিকে ১৪ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে হবে। একবারের জন্য ৭ দিনের অতিরিক্ত সময় অনুমোদনযোগ্য। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন না দিতে পারলে সেটি কমিটির অদক্ষতা হিসেবে বিবেচিত হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।

আপিল ও পুনর্বিবেচনা

দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে অভিযুক্ত ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে আপিল করতে পারবেন। তবে রাষ্ট্রপতির আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিল গ্রহণযোগ্য নয়। সে ক্ষেত্রে কেবল আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করা যাবে।

উপসংহার

২০২৫ সালের এই অধ্যাদেশ সরকারি কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে আরও জবাবদিহিমূলক করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। চাকরির নিরাপত্তার পাশাপাশি প্রশাসনিক শৃঙ্খলা রক্ষায় এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেও তারা মনে করেন।