1:00 pm, Sunday, 23 November 2025

হাড়ভাঙা খাটুনি, ন্যায্য মজুরি নেই: মৌলভীবাজারে হোটেল শ্রমিকদের বিক্ষোভে ফুঁসে উঠল উপেক্ষিত বাস্তবতা

হাড়ভাঙা খাটুনি, ন্যায্য মজুরি নেই: মৌলভীবাজারে হোটেল শ্রমিকদের বিক্ষোভে ফুঁসে উঠল উপেক্ষিত বাস্তবতা

মৌলভীবাজার | ২৩ জুলাই ২০২৫  —  নিরাপত্তা, ন্যায্য মজুরি, আরেকজন সহকর্মীর নির্মম হত্যার বিচার—এই তিনটি দাবিকে কেন্দ্র করে মৌলভীবাজারে রাজপথে নেমেছে হোটেল-রেস্টুরেন্ট সেক্টরের শ্রমিকরা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শহরের চৌমুহনায় হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়, যা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় সেখানে এসে সমাপ্ত হয়।

তবে এ মিছিল ছিলো শুধু একটি কর্মসূচি নয়, বরং একটি নির্যাতিত শ্রমিক শ্রেণির আর্তনাদ।

সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি—বহুদূরের স্বপ্ন?

বক্তারা বলেন, গত ৫ মে ২০২৫-এ হোটেল-রেস্টুরেন্ট শিল্পে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে সরকার গেজেট প্রকাশ করলেও, তা বাস্তবায়নে নেই কোনো তদারকি।

শ্রমিকরা বলছেন, দৈনিক ১০-১২ ঘণ্টা পরিশ্রম করেও যে মজুরি পান, তাতে ১০ দিনের সংসারও চলে না। বর্তমান বাজারদর ও ব্যয়বহুল জীবনযাত্রার সাথে তুলনা করলে শ্রমিকদের জীবিকা কেবল ‘টিকে থাকা’র লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।

দিনার আহমেদ রুমনের হত্যাকাণ্ড—শ্রমিক নিরাপত্তা কোথায়?

হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ১৩ জুলাই সিলেটের কাজিরবাজারে শাপলা হোটেলে দিনার আহমেদ রুমনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা শ্রমিক সমাজকে নাড়া দিয়েছে।

রুমনের বয়স ছিল মাত্র ২২ বছর। শ্রমিকরা বলছেন, এটা ছিল হোটেল সেক্টরের ‘জঘন্যতম ট্র্যাজেডি’, অথচ এ ঘটনায় এখনো হয়নি দৃষ্টান্তমূলক বিচার।

দাবিসমূহ:

  1. সরকারের ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন

  2. বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ৩০,০০০ টাকা মাসিক মজুরি ঘোষণা

  3. দৈনিক ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস নিশ্চিতকরণ

  4. নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র প্রদান

  5. শ্রমআইন অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপদ কাজের পরিবেশ

  6. দিনার আহমেদ রুমনের হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার

নেপথ্যের larger context:

বাংলাদেশে হোটেল-রেস্টুরেন্ট শ্রমিকদের বেশিরভাগই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত, যাদের সুনির্দিষ্ট চুক্তি, নিরাপত্তা কিংবা আইনি সুরক্ষা নেই।

এভাবে চলতে থাকলে ‘শ্রমজীবী শ্রেণির এক অংশ ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যাবে’, বলছেন স্থানীয় শ্রমিক নেতারা।

— সালেহ/ তাবাসসুম/ মেহেদী হাসান

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

দ্রব্যমূল্য কমানো ও সর্বস্তরে রেশনিং চালুর দাবি

হাড়ভাঙা খাটুনি, ন্যায্য মজুরি নেই: মৌলভীবাজারে হোটেল শ্রমিকদের বিক্ষোভে ফুঁসে উঠল উপেক্ষিত বাস্তবতা

Update Time : 01:39:59 pm, Wednesday, 23 July 2025

হাড়ভাঙা খাটুনি, ন্যায্য মজুরি নেই: মৌলভীবাজারে হোটেল শ্রমিকদের বিক্ষোভে ফুঁসে উঠল উপেক্ষিত বাস্তবতা

মৌলভীবাজার | ২৩ জুলাই ২০২৫  —  নিরাপত্তা, ন্যায্য মজুরি, আরেকজন সহকর্মীর নির্মম হত্যার বিচার—এই তিনটি দাবিকে কেন্দ্র করে মৌলভীবাজারে রাজপথে নেমেছে হোটেল-রেস্টুরেন্ট সেক্টরের শ্রমিকরা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শহরের চৌমুহনায় হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়, যা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় সেখানে এসে সমাপ্ত হয়।

তবে এ মিছিল ছিলো শুধু একটি কর্মসূচি নয়, বরং একটি নির্যাতিত শ্রমিক শ্রেণির আর্তনাদ।

সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি—বহুদূরের স্বপ্ন?

বক্তারা বলেন, গত ৫ মে ২০২৫-এ হোটেল-রেস্টুরেন্ট শিল্পে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে সরকার গেজেট প্রকাশ করলেও, তা বাস্তবায়নে নেই কোনো তদারকি।

শ্রমিকরা বলছেন, দৈনিক ১০-১২ ঘণ্টা পরিশ্রম করেও যে মজুরি পান, তাতে ১০ দিনের সংসারও চলে না। বর্তমান বাজারদর ও ব্যয়বহুল জীবনযাত্রার সাথে তুলনা করলে শ্রমিকদের জীবিকা কেবল ‘টিকে থাকা’র লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।

দিনার আহমেদ রুমনের হত্যাকাণ্ড—শ্রমিক নিরাপত্তা কোথায়?

হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ১৩ জুলাই সিলেটের কাজিরবাজারে শাপলা হোটেলে দিনার আহমেদ রুমনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা শ্রমিক সমাজকে নাড়া দিয়েছে।

রুমনের বয়স ছিল মাত্র ২২ বছর। শ্রমিকরা বলছেন, এটা ছিল হোটেল সেক্টরের ‘জঘন্যতম ট্র্যাজেডি’, অথচ এ ঘটনায় এখনো হয়নি দৃষ্টান্তমূলক বিচার।

দাবিসমূহ:

  1. সরকারের ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন

  2. বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ৩০,০০০ টাকা মাসিক মজুরি ঘোষণা

  3. দৈনিক ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস নিশ্চিতকরণ

  4. নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র প্রদান

  5. শ্রমআইন অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপদ কাজের পরিবেশ

  6. দিনার আহমেদ রুমনের হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার

নেপথ্যের larger context:

বাংলাদেশে হোটেল-রেস্টুরেন্ট শ্রমিকদের বেশিরভাগই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত, যাদের সুনির্দিষ্ট চুক্তি, নিরাপত্তা কিংবা আইনি সুরক্ষা নেই।

এভাবে চলতে থাকলে ‘শ্রমজীবী শ্রেণির এক অংশ ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যাবে’, বলছেন স্থানীয় শ্রমিক নেতারা।

— সালেহ/ তাবাসসুম/ মেহেদী হাসান