ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র | ২১ জুলাই ২০২৫ —
বিশ্বের অনেক দেশেই এমন আইন রয়েছে যা তাদের নাগরিকত্ব (citizenship) বাতিল বা প্রত্যাহার করার ক্ষমতা সরকারকে প্রদান করে। বিশেষ করে ন্যাচারালাইজড (naturalized) নাগরিকদের ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে সহজ এবং জটিলতাপূর্ণ উভয়ই হতে পারে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কয়েকজন বিখ্যাত ব্যক্তির নাগরিকত্ব বাতিল করে তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করার হুমকি দিয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন কমেডিয়ান রোজি ও’ডোনেল, বিলিয়নেয়ার উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক, এবং নিউইয়র্ক সিটির মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি।
বিশ্বব্যাপী নাগরিকত্ব প্রত্যাহার: রাজনৈতিক হাতিয়ার?
ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, বর্তমানে বিশ্বের অন্তত ১৩২টি দেশে এমন আইন রয়েছে যেখানে সরকার চাইলে কারও নাগরিকত্ব বাতিল করতে পারে। গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক সময় এই আইন ব্যবহার করা হয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য।
জাতিসংঘের মতে, “Nationality is a human right” — অর্থাৎ, নাগরিকত্ব মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনি কাঠামো
যুক্তরাষ্ট্রে শুধুমাত্র ন্যাচারালাইজড নাগরিকদের নাগরিকত্ব বাতিল করা সম্ভব। তবে এটি সহজ নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, যদি কেউ মিথ্যা তথ্য দিয়ে, জাল ডকুমেন্ট ব্যবহার করে, অথবা ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ায় প্রতারণা করে নাগরিকত্ব অর্জন করে—তাহলে তার বিরুদ্ধে “denaturalization” মামলার মাধ্যমে নাগরিকত্ব বাতিল করা যায়।
👉 ১৯৯০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আমেরিকায় মাত্র ১১টি মামলা হয় এ ধরনের, তবে বাস্তবে কতোজনের নাগরিকত্ব বাতিল হয়েছে তার নির্দিষ্ট হিসাব পাওয়া যায়নি।
অন্যান্য দেশের বাস্তবতা
-
যুক্তরাজ্য: ২০২৩ সালে শামিমা বেগম, যিনি সিরিয়ার ইসলামিক স্টেটে যোগ দেন, তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। যদিও তিনি যুক্তরাজ্যের জন্মসূত্রে নাগরিক ছিলেন, আদালত তার বিরুদ্ধে রায় দেয়। বাংলাদেশ তাকে গ্রহণ করেনি।
-
বাহরাইন: ২০১২ সালে শত শত মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয় সরকার, নিরাপত্তা হুমকি ও রাজনৈতিক অভিযোগের ভিত্তিতে।
- কানাডা: ২০২৩ সালে ৪ জনের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়।
৭৯টি দেশে, যদি কোনো ন্যাচারালাইজড সিটিজেন গুরুতর অপরাধ (serious crime) করে, তাহলে তার নাগরিকত্ব বাতিল করা যেতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের রায়
১৯৬৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়—কোনো ব্যক্তির নাগরিকত্ব বাতিল করার আগে তার অনুমতি বা যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা আবশ্যক।
প্রতিবেদক : হাকিকুল ইসলাম খোকন
সম্পাদনায় : সুমাইয়া/ তাবাসসুম/ মেহেদী
হাকিকুল ইসলাম খোকন 




























