দুমকি, পটুয়াখালী | ১৬ জুলাই ২০২৫ —
পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের বাহেরচর এলাকায় পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে শত শত পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। চলতি মৌসুমেই শতাধিক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে সরকারি রাস্তার পাশে, আত্মীয়-স্বজনের রান্নাঘর বা গোয়ালঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
দুই কিলোমিটারজুড়ে নদী ভাঙন
সরেজমিনে দেখা যায়, পশ্চিম আঙ্গারিয়া ও বাহেরচর এলাকার প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে পায়রা নদীর ভাঙন অব্যাহতভাবে চলছে। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিনের ভাঙনে প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকা নদীগর্ভে চলে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে ঘরবাড়ি, মসজিদ, মন্দির, এমনকি রাস্তাঘাটও।
ভুক্তভোগী বিধান (৫৩) ও সুধীর (৬৫) বলেন, ‘‘পায়রা নদীর ভাঙনে বাবার আমল থেকে কয়েকবার ঘরবাড়ি সরাতে হয়েছে। এবারও ঝুঁকিতে আছি। অনেকেই ইতিমধ্যেই বসতঘর ভেঙে রাস্তার পাশে নিয়ে গিয়েছে।’’
হঠাৎ ভাঙনে উদ্ধার অভিযান
৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহীন জানান, সম্প্রতি খেয়াঘাট এলাকায় বিশাল ফাটল ধরে হঠাৎ নদীগর্ভে দেবে যায়। এসময় ট্রলারের মাধ্যমে তিনজনকে উদ্ধার করা হয়, যাদের মধ্যে এক নারী গুরুতর আহত হন। এ পর্যন্ত প্রায় দেড়শ একর জমি, আড়াই শতাধিক বাড়ি, চারটি মসজিদ, তিনটি মন্দির ও একটি সরকারি অফিস নদীতে বিলীন হয়েছে।
পুনর্বাসন ও স্থায়ী ব্যবস্থা দাবি
আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান সোহরাব বলেন, ‘‘দীর্ঘদিনের ভাঙনে এলাকাবাসী আতঙ্কে আছে। অনেকে এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। পুনর্বাসন ও স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধে ব্লক ও পাইলিং স্থাপনের দাবি জানাচ্ছি।’’
প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগ
দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর মোঃ ইজাজুল হক বলেন, ‘‘পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পানি উন্নয়ন বোর্ড পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রাকিব হোসেন জানান, ‘‘বাহেরচরে নদী ভাঙন রোধে এর আগেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের নভেম্বর মাসে নতুন করে জিওব্যাগ স্থাপন করা হবে।’’
এদিকে পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে আতঙ্কিত বাহেরচরের মানুষ টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। নদীর পাড়ে নির্ঘুম রাত কাটছে ভাঙনকবলিত অসহায় মানুষের।
রূপান্তর সংবাদ-এ প্রতিনিধি হোন!
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা সিভি পাঠান: E-mail : rupantorsongbad@gmail.com
প্রতিবেদক : জাকির হোসেন হাওলাদার
সম্পাদনায় : সুমাইয়া/ তাবাসসুম/ এস এম মেহেদী
Reporter Name 



























