ঢাকা | ১৩ জুলাই ২০২৫ —
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন ও সমমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষমতা আরও ৬০ দিনের জন্য বাড়ানো হয়েছে। রোববার (১৩ জুলাই) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে রাষ্ট্রপতির আদেশে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ১২(১) ও ১৭ ধারার আওতায় সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন বা সমমর্যাদার কর্মকর্তা (কোস্টগার্ড ও বিজিবিতে প্রেষিত কর্মকর্তাসহ) সারা দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে বিভিন্ন ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবেন।
কী কী ক্ষমতা থাকবে?
প্রজ্ঞাপনে ফৌজদারি কার্যবিধির বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারা উল্লেখ করা হয়েছে, যার মাধ্যমে সেনা কর্মকর্তারা নিম্নোক্ত কাজগুলো করতে পারবেন:
- ধারা ৬৪: সেনা কর্মকর্তা তার সামনে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার ও জামিন দিতে পারবেন।
- ধারা ৬৫: অপরাধীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি বা অন্য কাউকে গ্রেপ্তার করতে নির্দেশ দিতে পারবেন।
- ধারা ৮৩ ও ৮৪: যে কোনো জায়গায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর এবং প্রয়োজনে পুলিশকে সেই পরোয়ানা বাস্তবায়নে নির্দেশ দিতে পারবেন।
- ধারা ৯৫(২): প্রয়োজন হলে ডাক বা টেলিগ্রাফ কর্তৃপক্ষের সহায়তায় চিঠিপত্র, নথিপত্র ইত্যাদি জব্দ করতে পারবেন।
- ধারা ১০০: বেআইনিভাবে আটক কোনো ব্যক্তিকে উদ্ধারের জন্য যে কোনো স্থানে তল্লাশি করতে পারবেন।
- ধারা ১০৫: সরাসরি তল্লাশির জন্য সার্চ ওয়ারেন্ট জারি করতে পারবেন।
- ধারা ১০৭: আইনশৃঙ্খলা ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
- ধারা ১০৯: ভবঘুরে বা সন্দেহভাজন ব্যক্তি থেকে ভালো আচরণের জন্য নিরাপত্তা বন্ড নিতে পারবেন।
- ধারা ১১০: অভ্যাসগত অপরাধীদের কাছ থেকে সদাচরণের মুচলেকা নিতে পারবেন।
- ধারা ১২৬: পূর্বে দেয়া মুচলেকা বাতিল করে নতুন সমন বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারবেন।
- ধারা ১২৭: বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার নির্দেশ দিতে পারবেন।
- ধারা ১২৮: সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশসহ বেসামরিক বাহিনীকে কাজে লাগাতে পারবেন।
- ধারা ১৩০: প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর অন্য কমান্ডিং অফিসারদের ব্যবহার করতে পারবেন।
- ধারা ১৩৩: স্থানীয় উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
- ধারা ১৪২: জনসাধারণের কোনো উপদ্রব ঘটলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে নির্দেশ দিতে পারবেন।
মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষমতা
এর পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে সেনা কর্মকর্তারা মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে পারবেন। কোনো অপরাধ ঘটতে দেখলে বা কোনো অপরাধ তাদের সামনে উন্মোচিত হলে, প্রয়োজনীয় তদন্ত ও স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ঘটনাস্থলেই দোষীকে শাস্তি দিতে পারবেন। তবে কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দুই বছরের সাজা দেওয়ার এখতিয়ার রয়েছে।
প্রেক্ষাপট
বিশেষ পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর এই নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়া হয়। মাঠ পর্যায়ে দ্রুত শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যই এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সূত্র: জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন, ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮, মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯
রূপান্তর সংবাদ-এ প্রতিনিধি হোন!
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা সিভি পাঠান: E-mail : rupantorsongbad@gmail.com
প্রতিবেদক : এস এম মেহেদী হাসান
সম্পাদনায় : সুমাইয়া/ তাবাসসুম/ মাহমুদুল
Reporter Name 




























