ঠাকুরগাঁও | ১২ জুলাই ২০২৫ —
বাংলাদেশি মেয়েকে বিয়ে করতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে পা রাখেন জাব্বির রহমান নামে এক যুবক। শুক্রবার বিকেলে শিলপাটি গ্রামের কনে নিশি আক্তারের সঙ্গে তার বিয়ের সব আয়োজন চলছিল। আত্মীয়স্বজন, খাওয়াদাওয়া, শামিয়ানা — সবই প্রস্তুত।
কিন্তু হঠাৎ সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে বিয়ের আসর বদলে গেল পালানোর নাটকে। বর-কনে দুজনেই অজানা গন্তব্যে উধাও। কনেপক্ষের লোকজন তখন মাইক্রোফোনে বললেন, ‘এটা বিয়ে নয়, আকিকার দাওয়াত।’ শামিয়ানা খুলে ফেলা হলো। অথচ স্থানীয়রা বলছেন, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে যুবকটি সীমান্ত পেরিয়ে কনের বাড়িতে এসেছিলেন।
পুলিশের অবস্থান
বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি শওকত আলী সরকার জানান, “আমরা খবর পেয়ে কনের বাড়িতে গিয়ে বরের মা ও বোনের ভারতীয় পাসপোর্ট-ভিসা যাচাই করি। বিয়ে হয়েছে কি না, তা পরিবার অস্বীকার করেছে। আইনগতভাবে যাচাই শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ
শহীদবাগ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা হাফিজুর রহমান বলেন,
“ইসলামে বিয়ে হলো সামাজিকভাবে ঘোষিত একটি বৈধ বন্ধন। লুকিয়ে-চুরিয়ে বা আইনি অনুমোদন ছাড়া বিয়ে শরিয়তসম্মত নয়। সীমান্ত পার হয়ে গোপন বিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলার জন্ম দিতে পারে, যা ইসলাম সমর্থন করে না।”
(সূত্র: সহীহ মুসলিম, হাদিস ১৪১৩)
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞের ব্যাখ্যা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. ইমরান হোসেন বলেন,
“ভিসা বা বৈধ নথি ছাড়া সীমান্ত পেরিয়ে বিয়ে করতে আসা স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হতে পারে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত আইন অনুযায়ী, অনুপ্রবেশকারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়। এমন ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের কড়া নজরদারি জরুরি।”
আইনজীবীর মতামত
সপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট রেজাউল করিম বলেন,
“যদি প্রমাণ হয় ভারতীয় নাগরিক অনধিকার প্রবেশ করেছে, তবে বিদেশি নাগরিক (উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ) আইন ১৯৪৬ অনুযায়ী মামলা হতে পারে। আবার যদি এটি প্রকৃত বিয়ে হয়, তবে সেটিকে নিবন্ধনের মাধ্যমে বৈধ করার প্রক্রিয়া থাকতে হবে। না হলে উভয়পক্ষ আইনি জটিলতায় পড়বে।”
রূপান্তর সংবাদ-এ প্রতিনিধি হোন!
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা সিভি পাঠান: E-mail : rupantorsongbad@gmail.com
প্রতিবেদক : খসরু হোসেন
সম্পাদনায় : সুমাইয়া ইসলাম/ তাবাসসুম/ মাহমুদুল
Reporter Name 



























