পুঠিয়া, রাজশাহী । ৮ জুলাই ২০২৫- কখনো আম, কখনো খেজুরের গুড়, কখনো গরু-ছাগল বা শাকসবজি—রাজশাহীর পুঠিয়ার বানেশ্বর হাট এক সময় ছিল উত্তরাঞ্চলের বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র। এখন কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আসে এই হাট থেকে, অথচ ময়লা আর দুর্গন্ধের স্তুপে হারিয়ে যাচ্ছে তার ঐতিহ্য।
দূষিত হাটে কষ্টের বেচাকেনা
হাটের ভেতর দিয়ে হাঁটতে গেলেই সবার আগে নাকের সামনে ভেসে আসে পচা মাছের পানি আর জবাই করা পশুর রক্তের গন্ধ।
মালেক আলী, মাংস বিক্রেতা, আক্ষেপ নিয়ে বললেন,
“পাশেই ময়লার ভাগাড় আর দূর্গন্ধ। মাছ-মাংস হাটার পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। পচা রক্ত আর মাছের পানি জমে থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। তবুও কষ্ট করে টিকে আছি।”
মাছ ব্যবসায়ী ইলিয়াস হোসেন আরও হতাশ,
“মাছ বাজারের পাশে ভাগাড়। শুকনায় একটু চলে, কিন্তু বৃষ্টি নামলেই মাছের পানি মিশে যায় হাটের পোকা-মাকড়ের সঙ্গে। মানুষ মাছ কিনতে ভয় পায়!”
ক্রেতারাও বিব্রত
বাজার করতে এসে বিরক্ত ক্রেতা আসলাম বললেন,
“চারিদিকে শুধু ময়লার স্তুপ আর দুর্গন্ধ। শুনি হাট ইজারায় কোটি কোটি টাকা ওঠে, ব্যাংকেও টাকা জমা থাকে। কিন্তু এ হাটের উন্নয়ন কে করবে?”
আরেক ক্রেতা সবুজ আলী বললেন,
“শুকনো মৌসুমে কষ্ট করে আসি। বৃষ্টি হলে পুরো হাট পানির নিচে ডুবে থাকে, সেই পানি আর দুর্গন্ধ শরীরেও লাগে। এভাবে আর কত?”
কোথায় গেলো এত রাজস্ব?
বানেশ্বর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান মতি বলেন,
“আম, গুড়, গরু-ছাগল—সবই আছে এই হাটে। প্রতিবছর কয়েক কোটি টাকা দিয়ে ইজারা নেওয়া হয়, অথচ উন্নয়নের কোনো উদ্যোগ নেই। ইউএনও সাহেব বারবার আশ্বাস দেন, কাজ কিছুই হয় না!”
প্রশাসন কী বলছে?
এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম নুর হোসেন নির্ঝর জানিয়েছেন,
“হাটের নোংরা পরিবেশের বড় কারণ ড্রেনেজ না থাকা। আমরা ড্রেন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। সবজি, মাছ, মাংসের দোকানগুলোতে টিনসেড হবে। বন্ধ ড্রেন সংস্কার আর অন্যান্য সমস্যারও দ্রুত সমাধান হবে।”
ঐতিহ্যের হাট, বেহাল চিত্র
যেখানে লাখো টাকার বেচাকেনা, সেখানেই ময়লা, দুর্গন্ধ আর পোকা-মাকড়ের রাজত্ব। বানেশ্বর হাটের চিত্র যেন প্রশ্ন তোলে—রাজস্ব যায় কোথায়? উন্নয়ন আটকে আছে কার দরজায়?
স্থানীয় ব্যবসায়ী আর ক্রেতারা তাই একটাই দাবি তুলেছেন—‘ময়লা সরাও, হাট বাঁচাও।’
রূপান্তর সংবাদ-এ প্রতিনিধি হোন!
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা সিভি পাঠান: E-mail : rupantorsongbad@gmail.com
প্রতিবেদক : মোহাম্মদ আলী
সম্পাদনায় : আসমা/ তাবাসসুম/ সালেহ
Reporter Name 


























