ইসলামী দাওয়াতের প্রয়োজনীয়তা, পদ্ধতি ও যুগোপযোগী রূপ নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দিয়েছেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী। সম্প্রতি ধর্মীয় এক আলোচনায় তিনি বলেন— মানবজাতির হেদায়াত, নৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক কল্যাণের জন্য দাওয়াতের ভূমিকা অপরিহার্য। নবী–রাসুলদের মূল দায়িত্বই ছিল মানবতার প্রতি তাওহীদের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়া।
দাওয়াত—উম্মতের সম্মিলিত দায়িত্ব
বক্তব্যে তিনি কুরআন–হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজ থেকে নিষেধ করা প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, “পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্রযন্ত্রের নেতৃত্ব পর্যন্ত—প্রতিটি স্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তি তার অধীনস্থদের ইসলামী আদর্শে পরিচালিত করার দায়িত্বপ্রাপ্ত।”
তিনি আরও মনে করিয়ে দেন, রাসুল (সা.) বলেছেন— “তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককে তার অধীনস্থদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত করা হবে।”
দাওয়াতকে সীমাবদ্ধতার বাইরে নেওয়ার আহ্বান
হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন— দাওয়াতের ক্ষেত্রকে অনেকেই নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছেন।
তার ভাষায়,
“মসজিদের ইমাম–মুয়াজ্জিন, মাদ্রাসার শিক্ষক, সংগঠনের কর্মী, পীর সাহেব, লেখক বা ওয়াজিন—অনেকেই মনে করেন দাওয়াত শুধু তাদের কাজ। অথচ দাওয়াত সবার, সীমাহীন। সকলেই নম্রতা ও উত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের কাছে ইসলামের সত্য বার্তা পৌঁছে দিতে পারেন।”
ডিজিটাল যুগে সম্প্রসারিত দাওয়াতের প্রয়োজনীয়তা
তিনি জানান, বিশ্বায়নের এই যুগে অমুসলিম বিশ্ব তাদের ধর্মীয় আদর্শ প্রচারে আধুনিক প্রযুক্তি ও সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করছে। তুলনায় মুসলমানরা পিছিয়ে।
তিনি বলেন—
“ইহুদি, খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের লাখ লাখ ওয়েবসাইট রয়েছে। তাদের প্রচারণায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে ভুল ধারণা তৈরি হচ্ছে। তাই ইসলামের শান্তির বার্তাকে ডিজিটাল মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে হবে।”
মুসলিম–অমুসলিম সবার কাছে দাওয়াত
বক্তার আহ্বান— দাওয়াত শুধু মুসলমানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে অমুসলিমদের নিকটও সমানভাবে পৌঁছে দিতে হবে। এতে সমাজে সাম্য, সহনশীলতা ও মানবিকতার ভিত্তি শক্তিশালী হবে।
দাওয়াতদাতার জন্য পুরস্কারের কথা স্মরণ
তিনি বলেন— “মানুষ মানুক বা না মানুক—দাওয়াতের চেষ্টা করলে আল্লাহ দাতা ব্যক্তিকেই সফলতা দেন। অন্যের ঈমান–আমলের উন্নতির পথে সাহায্য করলে আল্লাহ নিজের আমল দোরস্ত করে দেন।”
পরিশেষে দোয়া
বক্তব্যের শেষে তিনি মুসলিম সমাজের প্রতি দাওয়াতের কাজকে পুনর্জাগরিত করার আহ্বান জানিয়ে সকলের জন্য দোয়া করেন।
লেখক:
হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী
ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক ও কলামিস্ট
সাবেক ইমাম ও খতিব, কদমতলী মাজার জামে মসজিদ, সিলেট
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, জকিগঞ্জ উপজেলা সচেতন নাগরিক ফোরাম, সিলেট
সম্পাদনায় | এস এম মেহেদী হাসান | E-mail: rupantorsongbad@gmail.com
হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী 























