1:36 am, Monday, 8 December 2025

চট্টলা কন্যা’ শাহানা হানিফকে নিউইয়র্কে সংবর্ধনা

  • Reporter Name
  • Update Time : 06:38:08 pm, Wednesday, 3 December 2025
  • 39 Time View

নিউইয়র্ক | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫ — নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে টানা দ্বিতীয়বার নির্বাচিত প্রথম মুসলিম ও প্রথম বাংলাদেশি–আমেরিকান সদস্য শাহানা হানিফকে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা দিয়েছে চট্টগ্রাম সমিতি ইউএসএ।
রবিবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ব্রুকলিনের চট্টগ্রাম ভবনে অনুষ্ঠিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শাহানা হানিফ বলেন, গত চার বছর সিটি মেয়রের সঙ্গে নানা নীতিগত বিষয়ে লড়াই করতে হয়েছে। নতুন মেয়র হিসেবে বিশাল ব্যবধানে নির্বাচিত জোহরান মামদানি দায়িত্ব নিলে প্রগতিশীল রাজনীতির পথ আরও সুগম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

শাহানা বলেন, “বাংলাদেশিরা এখন নিউইয়র্কের দ্রুত-বর্ধনশীল এবং সবচেয়ে অগ্রগামী কমিউনিটি। রাজনীতিতে এই গতি ধরে রাখলেই আমেরিকান সমাজে আমাদের শক্ত অবস্থান আরও দৃঢ় হবে। ব্যালট যুদ্ধে অংশগ্রহণই হচ্ছে সেই পথের মূলভিত্তি।”

দুই মেয়াদের বেশি একই পদে লড়াই করা যায় না—এই নিয়মের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি জানান, আগামী চার বছরের কাজের মূল্যায়ন শেষে পরবর্তী সময়ে সিটি কম্পট্রোলার, মেয়র, কংগ্রেস বা অন্য কোনো পদে লড়ার বিষয়টি নির্ধারিত হবে।
“জনসেবাই আমার দায়বদ্ধতা। যতদিন পারো মানুষের পাশে থাকতে চাই,”—বলেন তিনি।

নিউইয়র্কে ট্যাক্সি চালক, ডেলিভারিম্যান, রেস্টুরেন্ট কর্মীসহ কমিউনিটির শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে নিজের ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন শাহানা। সম্প্রতি ব্রুকলিনের একটি রেস্টুরেন্টের বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রায় তিন মিলিয়ন ডলার বকেয়া বেতন আদায়ে সহায়তার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
এ ছাড়া অভিবাসন জটিলতা, গৃহায়ন সমস্যা ও ভাড়াটিয়া–বাড়িওয়ালার বিরোধ নিরসনে তার অফিস কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সমিতির সভাপতি আবু তাহের এবং সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি আরিফুল ইসলাম আরিফ। সমাবেশে চট্টগ্রাম সমিতি শাহানা হানিফকে ‘আজীবন সম্মাননা সদস্য’ পদে মনোনীত করে ক্রেস্ট প্রদান করে।
এর আগে কেবল দুই বিশিষ্ট বাঙালি—অর্থনীতিবিদ প্রফেসর নূরুল ইসলাম এবং নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস—এই মর্যাদা লাভ করেছিলেন।

বক্তারা শাহানাকে “বীর চট্টলার অগ্নিকন্যা” ও “বাংলাদেশের গৌরব” হিসেবে অভিহিত করেন। আমেরিকান রাজনীতিতে তার অগ্রযাত্রাকে বাংলাদেশি কমিউনিটির শক্তির প্রতীক বলেও মন্তব্য করেন তারা।

শাহানা হানিফের পিতা চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ এবং মা রেহানা হানিফকে তার সাফল্যের পেছনের প্রধান অনুপ্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। নিউইয়র্কে জন্ম নেওয়া শাহানা শিশু বয়সে পরিবারসহ চট্টগ্রামের পটিয়ায় অবস্থান করায় বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে তার গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়।

সমাবেশে বিভিন্ন সংগঠনের নেতা, মূলধারার রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্বরাও উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ৩৭২ শিশু হাফেজের মাধ্যমে ১০০ বার কোরআন খতম

চট্টলা কন্যা’ শাহানা হানিফকে নিউইয়র্কে সংবর্ধনা

Update Time : 06:38:08 pm, Wednesday, 3 December 2025

নিউইয়র্ক | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫ — নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে টানা দ্বিতীয়বার নির্বাচিত প্রথম মুসলিম ও প্রথম বাংলাদেশি–আমেরিকান সদস্য শাহানা হানিফকে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা দিয়েছে চট্টগ্রাম সমিতি ইউএসএ।
রবিবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ব্রুকলিনের চট্টগ্রাম ভবনে অনুষ্ঠিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শাহানা হানিফ বলেন, গত চার বছর সিটি মেয়রের সঙ্গে নানা নীতিগত বিষয়ে লড়াই করতে হয়েছে। নতুন মেয়র হিসেবে বিশাল ব্যবধানে নির্বাচিত জোহরান মামদানি দায়িত্ব নিলে প্রগতিশীল রাজনীতির পথ আরও সুগম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

শাহানা বলেন, “বাংলাদেশিরা এখন নিউইয়র্কের দ্রুত-বর্ধনশীল এবং সবচেয়ে অগ্রগামী কমিউনিটি। রাজনীতিতে এই গতি ধরে রাখলেই আমেরিকান সমাজে আমাদের শক্ত অবস্থান আরও দৃঢ় হবে। ব্যালট যুদ্ধে অংশগ্রহণই হচ্ছে সেই পথের মূলভিত্তি।”

দুই মেয়াদের বেশি একই পদে লড়াই করা যায় না—এই নিয়মের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি জানান, আগামী চার বছরের কাজের মূল্যায়ন শেষে পরবর্তী সময়ে সিটি কম্পট্রোলার, মেয়র, কংগ্রেস বা অন্য কোনো পদে লড়ার বিষয়টি নির্ধারিত হবে।
“জনসেবাই আমার দায়বদ্ধতা। যতদিন পারো মানুষের পাশে থাকতে চাই,”—বলেন তিনি।

নিউইয়র্কে ট্যাক্সি চালক, ডেলিভারিম্যান, রেস্টুরেন্ট কর্মীসহ কমিউনিটির শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে নিজের ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন শাহানা। সম্প্রতি ব্রুকলিনের একটি রেস্টুরেন্টের বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রায় তিন মিলিয়ন ডলার বকেয়া বেতন আদায়ে সহায়তার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
এ ছাড়া অভিবাসন জটিলতা, গৃহায়ন সমস্যা ও ভাড়াটিয়া–বাড়িওয়ালার বিরোধ নিরসনে তার অফিস কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সমিতির সভাপতি আবু তাহের এবং সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি আরিফুল ইসলাম আরিফ। সমাবেশে চট্টগ্রাম সমিতি শাহানা হানিফকে ‘আজীবন সম্মাননা সদস্য’ পদে মনোনীত করে ক্রেস্ট প্রদান করে।
এর আগে কেবল দুই বিশিষ্ট বাঙালি—অর্থনীতিবিদ প্রফেসর নূরুল ইসলাম এবং নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস—এই মর্যাদা লাভ করেছিলেন।

বক্তারা শাহানাকে “বীর চট্টলার অগ্নিকন্যা” ও “বাংলাদেশের গৌরব” হিসেবে অভিহিত করেন। আমেরিকান রাজনীতিতে তার অগ্রযাত্রাকে বাংলাদেশি কমিউনিটির শক্তির প্রতীক বলেও মন্তব্য করেন তারা।

শাহানা হানিফের পিতা চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ এবং মা রেহানা হানিফকে তার সাফল্যের পেছনের প্রধান অনুপ্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। নিউইয়র্কে জন্ম নেওয়া শাহানা শিশু বয়সে পরিবারসহ চট্টগ্রামের পটিয়ায় অবস্থান করায় বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে তার গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়।

সমাবেশে বিভিন্ন সংগঠনের নেতা, মূলধারার রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্বরাও উপস্থিত ছিলেন।