জাকির হোসেন হাওলাদার | পবিপ্রবি প্রতিনিধি | ২২ নভেম্বর ২০২৫ — পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে স্থাপিত দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র স্থায়ী ভূমিকম্প পরিমাপক সিসমোগ্রাফ প্রায় ১৫ বছর ধরে সম্পূর্ণ অচল। ২০১০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় স্থাপিত ব্যয়বহুল এই যন্ত্রটি ২০১১ সালের শুরুতেই বিকল হয়ে পড়ে এবং পুনরায় চালুর কয়েক মাসের মধ্যেই আবার অচল হয়ে যায়। এরপর থেকে এটি আর সচল হয়নি।
ফলে ২১ নভেম্বরের ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পসহ সাম্প্রতিক কোনো কম্পনের আনুষ্ঠানিক তথ্য সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে উপকূলীয় দুর্যোগপ্রবণ দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সাড়ে চার কোটি মানুষ বাস্তব ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সেসময় দেশের পাঁচটি স্থানে এবং দুটি জেলা শহরে আধুনিক সিসমোগ্রাফ বসানো হয়েছিল। এরই অংশ হিসেবে পবিপ্রবিতে যন্ত্রটি স্থাপন করা হয়। তবে রক্ষণাবেক্ষণজনিত ঘাটতি, লোকবল সংকট ও প্রযুক্তিগত পুরোনোত্বের কারণে এটি অকার্যকর হয়ে পড়ে।
ভূমিকম্প–বিজ্ঞানীরা বলছেন, কম্পনের প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি ওয়েভ আগে আসে, আর সারফেস ওয়েভ আসতে সময় লাগে এক থেকে দুই মিনিট। কার্যকর সিসমোগ্রাফ থাকলে এই সময় ব্যবধান কাজে লাগিয়ে আগাম সতর্কতা দেওয়া সম্ভব—যা জান–মালের ক্ষতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।
পবিপ্রবির ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. এসএম তাওহীদুল ইসলাম জানান, যন্ত্রটি অ্যানালগ সিস্টেম হওয়ায় এর কার্যক্ষমতা সীমিত এবং বিশ্বজুড়েই এখন ডিজিটাল সিসমোগ্রাফে রূপান্তর হয়েছে। যেহেতু এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত প্রকল্পের অংশ, তাই নতুন আপগ্রেড বা প্রতিস্থাপন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
গতকাল সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে নরসিংদীর মাধবদীকে কেন্দ্র করে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে শিশুসহ ১০ জন নিহত এবং কয়েক শতাধিক আহত হয়।
দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র সিসমোগ্রাফ অচল থাকায় নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। স্থানীয় গবেষক ও সচেতন নাগরিকরা দ্রুত নতুন প্রযুক্তিনির্ভর সিসমোগ্রাফ স্থাপন ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন।
সম্পাদনায় | এস এম মেহেদী হাসান | E-mail: rupantorsongbad@gmail.com
Reporter Name 




























