নড়াইল | ২০ নভেম্বর ২০২৫ — নড়াইলের চাপাইল–কালিয়া সড়ক এখন যেন মৃত্যুফাঁদ। প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে অবৈধ, লাইসেন্সবিহীন ও নিয়ন্ত্রণহীন যানবাহনের দৌরাত্ম্য। বিশেষ করে নছিমন, করিমন, ভটভটি, ট্রলি জাতীয় ‘ঘাতক’ গাড়িগুলো সড়কের বড় অংশজুড়ে বেপরোয়া গতিতে ছুটে চলায় চরম ঝুঁকির মুখে পড়ছেন পথচারী, শিক্ষার্থী, কৃষক, শিশু–বৃদ্ধা ও সাধারণ যাত্রীরা।
ট্রাফিক নেই, তদারকি নেই—অরাজকতা চরমে
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে কোনো ট্রাফিক তদারকি না থাকায় পরিস্থিতি নিতান্তই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। রাস্তা সংকীর্ণ, দুই পাশে দোকান–পাট ও এলোমেলো পার্কিং; তার ওপর ধান মৌসুমে সড়কের ওপরই ধান মাড়াই করা—সব মিলিয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি প্রতিদিন বাড়ছে।
অভিযোগ রয়েছে, কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি অবৈধ গাড়ির ব্যবসা ও চলাচলকে আড়াল থেকে মদদ দিচ্ছেন। ফলে মাঝে মাঝে অভিযান হলেও তা স্থায়ী হয় না।
ব্যবসায়ীদের আতঙ্ক: ‘সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় লাগে’
পহরডাঙ্গা বাজার এলাকার মুদি ব্যবসায়ী শরিফুল মোল্লা বলেন,
“প্রতিদিনই দেখি ছুটে আসছে এসব অবৈধ গাড়ি। একটু অসতর্ক হলেই বড় দুর্ঘটনা। আমাদের সন্তানদের স্কুলে যেতে ভয় লাগে।”
প্রতিদিন যাতায়াত করে হাজারো মানুষ
কালিয়া সদর, বাঐসোনা, কলাবাড়িয়া, জয়নগর, মাউলী, পহরডাঙ্গা, খাশিয়ালসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ গোপালগঞ্জ অভিমুখে প্রতিদিন এই সড়ক ব্যবহার করেন। বাজার, স্কুল, কর্মস্থল, কৃষিকাজ ও চিকিৎসাসহ জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই রাস্তা অপরিহার্য।
তাদের দাবি—সড়কের বেহাল অবস্থা ও অবৈধ যানবাহনের বিশৃঙ্খলা মিলে এটি এখন পুরোপুরি মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের সতর্কতা
১০নং পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মল্লিক মাহমুদুল ইসলাম বলেন,
“কালিয়া–চাপাইল সড়কে নিয়ন্ত্রণহীন অবৈধ গাড়ি চলছে—এটা আইনের লঙ্ঘন। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা সময়ের ব্যাপার মাত্র।”
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জরুরি পদক্ষেপের দাবি
স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আগেই চারটি পদক্ষেপ জরুরি—
- নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা
- অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা
- সড়ক প্রশস্তকরণ ও আধুনিকায়ন
- পথচারী ও চালকদের সচেতনতা বৃদ্ধি
শেষ কথা
নড়াইলের চাপাইল–কালিয়া সড়ক দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ পথ। কিন্তু অবৈধ যানবাহনের নিয়ন্ত্রণহীন দৌরাত্ম্য মানুষের জীবন–জীবিকা ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ না হলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা, যা এড়ানো সম্ভব ছিল আগেই।
সম্পাদনায় | এস এম মেহেদী হাসান | E-mail: rupantorsongbad@gmail.com
Reporter Name 




























