ধর্ম ডেস্ক: কোরআনের ৬২তম সূরা ‘আল-জুমু‘আ’ মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি অধ্যায়। এটি মদীনায় নাজিলকৃত একটি সূরা, যার আয়াত সংখ্যা ১১। এই সূরায় জুমার নামাজের গুরুত্ব, জ্ঞানচর্চার আহ্বান এবং দুনিয়াবি ব্যস্ততা থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর স্মরণে আসার বার্তা দেওয়া হয়েছে।

সূরার শুরুতে আল্লাহ তায়ালা বলেন—

“আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে—তিনি রাজাধিরাজ, পবিত্র, পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।”
(আল-জুমু‘আ : আয়াত ১)

এরপর রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে, তিনি এমন এক জাতির মাঝে প্রেরিত হয়েছেন যারা আগে ছিল স্পষ্ট ভ্রান্তিতে, কিন্তু তাঁর মাধ্যমে তারা পেয়েছে জ্ঞান ও পরিশুদ্ধতা।

সূরাটিতে আরও উল্লেখ আছে—

“হে মুমিনগণ! জুমার দিনের নামাজের আহ্বান দেওয়া হলে, তোমরা আল্লাহর স্মরণে ছুটে এসো এবং ক্রয়-বিক্রয় পরিত্যাগ করো। এটি তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।”
(আল-জুমু‘আ : আয়াত ৯)

ধর্মবিশারদদের মতে, এই আয়াত মুসলমানদের সামাজিক ও আধ্যাত্মিক ঐক্যের প্রতীক। জুমার দিন কেবল নামাজের দিন নয়, বরং এটি আত্মশুদ্ধি, শিক্ষা ও ঐক্যের দিন।

এ সূরার শেষাংশে আল্লাহ তায়ালা সতর্ক করেছেন, দুনিয়ার লোভ ও ব্যবসা যেন কখনো ধর্মীয় দায়িত্ব থেকে মানুষকে বিমুখ না করে।

“যা আল্লাহর কাছে আছে, তা বিনোদন ও ব্যবসার চেয়ে উত্তম; আর আল্লাহই উত্তম রিজিকদাতা।”
(আল-জুমু‘আ : আয়াত ১১)

🌙 মূল শিক্ষা

• জুমার নামাজ মুসলমানদের ঐক্য ও আত্মশুদ্ধির প্রতীক।
• আল্লাহর স্মরণ ও জ্ঞানচর্চা দুনিয়ার কাজের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
• মৃত্যুকে ভয় নয়, বরং আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতি নিতে হবে।
• জ্ঞান ছাড়া ধর্মীয় অহংকার অর্থহীন।

সূরা আল-জুমু‘আ আমাদের শিক্ষা দেয়— জুমার দিন যেন শুধু নামাজের দিন না হয়, বরং এটি হোক আত্মসমালোচনা, দোয়া, দান ও আল্লাহর স্মরণে পরিপূর্ণ এক দিন।

সম্পাদনায় : এস এম মেহেদী হাসান, মোবাইল : ০১৭১১ ৯৩৪৩৫৮