সন্তানের মৃত্যু নিয়ে কোটি টাকার বাণিজ্যের অভিযোগ বাবার বিরুদ্ধে
নোয়াখালী | ৩০ জুলাই ২০২৫ — নোয়াখালীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিহত মো. ইমতিয়াজকে কেন্দ্র করে কোটি টাকার বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে তার বাবা হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে। চাটখিল উপজেলার ছাত্রসমাজের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তোলা হয়।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে চাটখিল আলিয়া মাদ্রাসা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নোয়াখালী সরকারি কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম রনি।
অভিযোগের বিবরণ
রফিকুল ইসলাম বলেন,
“ইমতিয়াজকে গেজেটভুক্তির মাধ্যমে সরকারি সুবিধা আদায় করেছেন তার বাবা। মামলার ভয় দেখিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা এবং ৭০-৮০ লাখ টাকা আদায় করেছেন। এছাড়া ‘জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ থেকে আরও ১৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।”
তিনি দাবি করেন, ইমতিয়াজ কোনো ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
“থানা থেকে লুট করা অস্ত্র কোমরে রেখে পালানোর সময় নিজের গুলিতেই মারা যান ইমতিয়াজ। এর পর থেকেই তার বাবার ‘জুলাই বাণিজ্য’ চলছে।”
রনি আরও অভিযোগ করেন, জেলা প্রশাসকের কাছে বিষয়টি জানাতে গেলে তাদের বিরুদ্ধে উল্টো ১০ লাখ টাকার চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়।
“আমরা এ মিথ্যা অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেব,” তিনি বলেন।
“শহীদের অপমান”
সংবাদ সম্মেলনে নোয়াখালী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী গোলাপ হোসেন ফরহাদ বলেন,
“যেভাবে কেউ মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়েও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে, ঠিক সেভাবেই ইমতিয়াজও আন্দোলনে অংশ না নিয়েও ‘জুলাই শহীদ’ হিসেবে গেজেটভুক্ত হয়েছেন। এটি শহীদদের প্রতি চরম অপমান এবং রাষ্ট্রীয় সুবিধার অপব্যবহার।”
ফরহাদ আরও বলেন,
“আমরা এর সঠিক তদন্ত ও শাস্তি দাবি করছি।”
উপস্থিত শিক্ষার্থীরা
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তাহা ইয়াসিন, তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম এবং চৌমুহনী এস. কলেজের শিক্ষার্থী মো. সামির।
বাবার প্রতিক্রিয়া মেলেনি
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও ইমতিয়াজের বাবা হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
প্রশাসনের অবস্থান
চাটখিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান জানান,
“ইমতিয়াজের বিষয়টি তদন্তাধীন। আপাতত তার নাম সব ধরনের সরকারি সুবিধা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে নেওয়া হবে।”
সম্পর্কিত প্রতিবেদন:
👉 আওয়ামী লীগের পতনের শিক্ষা ও বিএনপির বার্তা | বিশ্লেষণ: সাংবাদিক এস এম মেহেদী হাসান
— আসমা আক্তার/ তাবাসসুম/ এস এম মেহেদী
আসমা আক্তার 



























