এইডস আক্রান্ত কিশোরীকে ধর্ষণ ও গর্ভপাত, পুনর্বাসন কেন্দ্রের কর্মীসহ চারজন গ্রেপ্তার
মহারাষ্ট্র, ভারত | ২৬ জুলাই ২০২৫ — ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের লাতুর জেলায় অবস্থিত একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে ঘটেছে একটি হৃদয়বিদারক ও ন্যক্কারজনক ঘটনা। অভিযোগ উঠেছে, কেন্দ্রটিতে আশ্রয় নেওয়া ১৬ বছর বয়সী একটি এইচআইভি আক্রান্ত কিশোরীকে দুই বছর ধরে বারবার ধর্ষণ করেছেন এক কর্মী। ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে, কেন্দ্রের সহযোগিতায় জোর করে তার গর্ভপাত করানো হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ ও সংবাদ সংস্থা পিটিআই শনিবার (২৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে ঘটনাটি প্রকাশ করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী কিশোরী ওই পুনর্বাসন কেন্দ্রে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে আশ্রয় নেয়। এরপর থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত কেন্দ্রেরই এক কর্মী তাকে চারবার ধর্ষণ করে। ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে তাকে এসব ঘটনা গোপন রাখতে বাধ্য করা হয়।
নির্যাতনের পর কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গর্ভপাত করানো হয়। তার দাবি, সে কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালেও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। অভিযোগ বাক্সে জমা দেওয়া চিঠিও ছিঁড়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি থানায় অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন—মূল অভিযুক্ত কর্মী, প্রতিষ্ঠাতা, সুপার, আরও এক নারী কর্মী এবং জোর করে গর্ভপাত করানো চিকিৎসক।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠাতা, সুপার ও দুই কর্মীকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট অনুসারে, সেখানে বর্তমানে ২৩ জন নাবালক এবং সাতজন নাবালিকা রয়েছে—যারা সবাই এইচআইভি আক্রান্ত।
সচেতনতার দৃষ্টিকোণ:
এ ধরনের ঘটনা আমাদের সমাজের সবচেয়ে প্রান্তিক ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের ওপর যে ভয়াবহ নিপীড়ন চলছে, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়। এইচআইভি আক্রান্ত শিশুদের নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার নামে যদি তাদেরই উপর ঘটে যৌন সহিংসতা, তবে এটি শুধু নৈতিক নয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের চরম উদাহরণ।
পুনর্বাসন কেন্দ্র কিংবা যেকোনো শিশু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত তদারকি, স্বচ্ছ অভিযোগ গ্রহণ ব্যবস্থা, এবং আইন অনুযায়ী দ্রুত বিচার কার্যকর না হলে এ ধরনের অপরাধ থামানো যাবে না।
প্রতিটি শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্র, সমাজ এবং পরিবারের সম্মিলিত দায়িত্ব। এমন অপরাধের বিচার শুধু আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে নয়, সচেতন সমাজ গড়ে তোলার মাধ্যমেও সম্ভব।
— মোঃ সালেহ আহমদ (স’লিপক)/ তাবাসসুম/ এস এম মেহেদী
Reporter Name 




























