2:04 pm, Sunday, 23 November 2025

দুমকিতে নিষিদ্ধ জালে দেশীয় মাছের অস্তিত্ব বিপন্ন, প্রশাসনের নিরবতায় উদ্বেগ

  • Reporter Name
  • Update Time : 10:20:22 am, Thursday, 24 July 2025
  • 47 Time View

দুমকিতে নিষিদ্ধ জালে দেশীয় মাছের অস্তিত্ব বিপন্ন, প্রশাসনের নিরবতায় উদ্বেগ

দুমকি, পটুয়াখালী | ২৪ জুলাই ২০২৫  —  দুমকি উপজেলার খাল-বিল, নদী ও জলাশয়ে দিন দিন বাড়ছে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকার। এর ফলে আশঙ্কাজনক হারে হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। বর্ষা মৌসুমে অবৈধ জালের ব্যবহার ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে, যা পরিবেশ ও প্রাকৃতিক প্রতিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।

জানা যায়, উপজেলার অন্তত ২৩টি খাল ও বিল, যেমন—নলদোয়ানী খাল, বুদাই খাল, ভাড়ানী খাল, বাদ্দার খাল, দাসপারা খাল এবং কদমতলার খালসহ অসংখ্য জলাশয়ে কারেন্ট জাল, ম্যাজিক জাল, সুতিজাল, বেহুন্দি, ভেসাল ও চায়না রিং জালের অবাধ ব্যবহার হচ্ছে। এসব জাল দিয়ে শুধু পোনামাছই নয়, ধরা হচ্ছে জলজ অন্যান্য প্রাণীও। এতে দেশীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্র অভিযোগ করে বলেন, মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা এসব বিষয়ে জানলেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ। মাঝে মধ্যে লোক দেখানো অভিযান চালানো হলেও নিষিদ্ধ জাল পুরোপুরি উচ্ছেদে উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে।

লেবুখালী ইউনিয়ন মৎস্যজীবী দলের সভাপতি মো. জসীম উদ্দিন বলেন, “ভাড়ানী খালে বেহুন্দি জাল ফেলে দিনরাত মাছ ধরা হচ্ছে। মৎস্য অফিসকে বারবার বললেও তেমন সাড়া মেলেনি।”

উপজেলার বিভিন্ন বাজারে দেশীয় মাছের সরবরাহ কমে গেছে। বিশেষ করে শোল, বোয়াল, গজার, মাগুর, শিং, কৈ, পাবদা, বাইম, খলসে মাছের দেখা এখন দুষ্প্রাপ্য। অবৈধ জালের ছড়াছড়িতে জলজ জীববৈচিত্র্য ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছে।

দুমকি উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, “আমরা অভিযান চালাচ্ছি, তবে সবার সহযোগিতা জরুরি। আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”

প্রাকৃতিক মাছের প্রজনন চক্র ও পরিবেশ সংরক্ষণে কঠোর নজরদারি ও জবাবদিহিতা চায় এলাকাবাসী। তারা মনে করছেন, এখনই ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে দেশীয় মাছ শুধু ইতিহাসে পরিণত হবে।

প্রতিবেদক : জাকির হোসেন হাওলাদার

— মিনারা আজমী/ তাবাসসুম/ সালেহ আহমদ

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

দ্রব্যমূল্য কমানো ও সর্বস্তরে রেশনিং চালুর দাবি

দুমকিতে নিষিদ্ধ জালে দেশীয় মাছের অস্তিত্ব বিপন্ন, প্রশাসনের নিরবতায় উদ্বেগ

Update Time : 10:20:22 am, Thursday, 24 July 2025

দুমকিতে নিষিদ্ধ জালে দেশীয় মাছের অস্তিত্ব বিপন্ন, প্রশাসনের নিরবতায় উদ্বেগ

দুমকি, পটুয়াখালী | ২৪ জুলাই ২০২৫  —  দুমকি উপজেলার খাল-বিল, নদী ও জলাশয়ে দিন দিন বাড়ছে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকার। এর ফলে আশঙ্কাজনক হারে হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। বর্ষা মৌসুমে অবৈধ জালের ব্যবহার ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে, যা পরিবেশ ও প্রাকৃতিক প্রতিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।

জানা যায়, উপজেলার অন্তত ২৩টি খাল ও বিল, যেমন—নলদোয়ানী খাল, বুদাই খাল, ভাড়ানী খাল, বাদ্দার খাল, দাসপারা খাল এবং কদমতলার খালসহ অসংখ্য জলাশয়ে কারেন্ট জাল, ম্যাজিক জাল, সুতিজাল, বেহুন্দি, ভেসাল ও চায়না রিং জালের অবাধ ব্যবহার হচ্ছে। এসব জাল দিয়ে শুধু পোনামাছই নয়, ধরা হচ্ছে জলজ অন্যান্য প্রাণীও। এতে দেশীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্র অভিযোগ করে বলেন, মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা এসব বিষয়ে জানলেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ। মাঝে মধ্যে লোক দেখানো অভিযান চালানো হলেও নিষিদ্ধ জাল পুরোপুরি উচ্ছেদে উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে।

লেবুখালী ইউনিয়ন মৎস্যজীবী দলের সভাপতি মো. জসীম উদ্দিন বলেন, “ভাড়ানী খালে বেহুন্দি জাল ফেলে দিনরাত মাছ ধরা হচ্ছে। মৎস্য অফিসকে বারবার বললেও তেমন সাড়া মেলেনি।”

উপজেলার বিভিন্ন বাজারে দেশীয় মাছের সরবরাহ কমে গেছে। বিশেষ করে শোল, বোয়াল, গজার, মাগুর, শিং, কৈ, পাবদা, বাইম, খলসে মাছের দেখা এখন দুষ্প্রাপ্য। অবৈধ জালের ছড়াছড়িতে জলজ জীববৈচিত্র্য ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছে।

দুমকি উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, “আমরা অভিযান চালাচ্ছি, তবে সবার সহযোগিতা জরুরি। আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”

প্রাকৃতিক মাছের প্রজনন চক্র ও পরিবেশ সংরক্ষণে কঠোর নজরদারি ও জবাবদিহিতা চায় এলাকাবাসী। তারা মনে করছেন, এখনই ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে দেশীয় মাছ শুধু ইতিহাসে পরিণত হবে।

প্রতিবেদক : জাকির হোসেন হাওলাদার

— মিনারা আজমী/ তাবাসসুম/ সালেহ আহমদ