2:04 pm, Sunday, 23 November 2025

একটি সেতু বদলে দিতে পারে লক্ষাধিক মানুষের জীবন: বরিশালের বাগধা ঘাটে স্কুলপড়ুয়া ও গ্রামবাসীর আর্তি

আগৈলঝাড়া, বরিশাল। ২০ জুলাই ২০২৫ —

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের সন্ধ্যা নদী এখন যেন ৫০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের প্রতিদিনের যন্ত্রণার প্রতীক। একটি মাত্র সেতুর অভাবে এ অঞ্চলের মানুষ বছরের পর বছর ধরে জীবন নিয়ে খেয়া পার হচ্ছেন—বিশেষ করে নারী, শিশু, শিক্ষার্থী ও বয়স্কদের জন্য এই যাতায়াত রীতিমতো বিপজ্জনক।

নদীর ওপারে শিক্ষা, এপারে চিকিৎসা—দুইয়ের মাঝে জীবন বাজি রেখে খেয়া

সন্ধ্যা নদীর দুই পাড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রায় ৫০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এপার-ওপার যাতায়াত করেন। পূর্বপাড়ে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউপি অফিস; পশ্চিমপাড়ে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও বাজার। কিন্তু এই দুই অংশের সংযোগ—একটি সেতু—আজও নির্মিত হয়নি। খেয়া নৌকাই একমাত্র ভরসা।

প্রতিদিন স্কুল-কলেজে যাতায়াত করা অন্তত ১২০০ শিক্ষার্থী ও অসংখ্য সাধারণ মানুষ বাধ্য হন ১০-১৫ মিনিট সময় নিয়ে খেয়ায় নদী পার হতে। অন্যদিকে ঘুরে পাশের পয়সারহাট সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে হলে সময় লাগে প্রায় ৫০ মিনিট।

দুর্ভোগে শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী, ঝুঁকিপূর্ণ পারাপারে অসংখ্য দুর্ঘটনা

স্থানীয় শিক্ষক মজিবর রহমান বলেন, “নদীতে ভাটা থাকলে বা ঝড়বৃষ্টিতে খেয়ায় ওঠা-নামা করাও কঠিন হয়ে পড়ে। ব্যবসায়ী, কৃষক, রুগ্ন রোগী—সবাইকে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পার হতে হয়।”

এমন পরিস্থিতিতে খেয়াঘাটে দাঁড়িয়ে দেখা গেল, ২৫ জন যাত্রী একটি নৌকায় চেপে ওপারে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে শিশুসহ অন্তত ১০ জন স্কুলছাত্রী। এমন দৃশ্য সেখানে প্রতিদিনের বাস্তবতা।

সরকারি উদ্যোগের অভাব, সেতু স্বপ্নেই সীমাবদ্ধ

এলজিইডি বা সেতু বিভাগ এখনো বাগধা খেয়াঘাটে সেতু নির্মাণের কোনো পরিকল্পনা নেয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী রবীন্দ্র চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “দুই পাশে ঘাটলা স্থাপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে টেন্ডার হলে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

একটি সেতুই পারে শিক্ষায় গতি, অর্থনীতিতে অগ্রগতি আনতে

স্থানীয়রা বলছেন, “শুধু সেতুটি হলে বদলে যাবে গোটা অঞ্চল। শিক্ষার্থীরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারবে, স্বাস্থ্যসেবায় পৌঁছানো সহজ হবে, কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণেও সুবিধা হবে।”

প্রতিবেদক : অপূর্ব লাল সরকার

সম্পাদনায় : সুমাইয়া/ তাবাসসুম/ মেহেদী

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

দ্রব্যমূল্য কমানো ও সর্বস্তরে রেশনিং চালুর দাবি

একটি সেতু বদলে দিতে পারে লক্ষাধিক মানুষের জীবন: বরিশালের বাগধা ঘাটে স্কুলপড়ুয়া ও গ্রামবাসীর আর্তি

Update Time : 12:30:27 pm, Monday, 21 July 2025

আগৈলঝাড়া, বরিশাল। ২০ জুলাই ২০২৫ —

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের সন্ধ্যা নদী এখন যেন ৫০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের প্রতিদিনের যন্ত্রণার প্রতীক। একটি মাত্র সেতুর অভাবে এ অঞ্চলের মানুষ বছরের পর বছর ধরে জীবন নিয়ে খেয়া পার হচ্ছেন—বিশেষ করে নারী, শিশু, শিক্ষার্থী ও বয়স্কদের জন্য এই যাতায়াত রীতিমতো বিপজ্জনক।

নদীর ওপারে শিক্ষা, এপারে চিকিৎসা—দুইয়ের মাঝে জীবন বাজি রেখে খেয়া

সন্ধ্যা নদীর দুই পাড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রায় ৫০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এপার-ওপার যাতায়াত করেন। পূর্বপাড়ে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউপি অফিস; পশ্চিমপাড়ে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও বাজার। কিন্তু এই দুই অংশের সংযোগ—একটি সেতু—আজও নির্মিত হয়নি। খেয়া নৌকাই একমাত্র ভরসা।

প্রতিদিন স্কুল-কলেজে যাতায়াত করা অন্তত ১২০০ শিক্ষার্থী ও অসংখ্য সাধারণ মানুষ বাধ্য হন ১০-১৫ মিনিট সময় নিয়ে খেয়ায় নদী পার হতে। অন্যদিকে ঘুরে পাশের পয়সারহাট সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে হলে সময় লাগে প্রায় ৫০ মিনিট।

দুর্ভোগে শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী, ঝুঁকিপূর্ণ পারাপারে অসংখ্য দুর্ঘটনা

স্থানীয় শিক্ষক মজিবর রহমান বলেন, “নদীতে ভাটা থাকলে বা ঝড়বৃষ্টিতে খেয়ায় ওঠা-নামা করাও কঠিন হয়ে পড়ে। ব্যবসায়ী, কৃষক, রুগ্ন রোগী—সবাইকে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পার হতে হয়।”

এমন পরিস্থিতিতে খেয়াঘাটে দাঁড়িয়ে দেখা গেল, ২৫ জন যাত্রী একটি নৌকায় চেপে ওপারে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে শিশুসহ অন্তত ১০ জন স্কুলছাত্রী। এমন দৃশ্য সেখানে প্রতিদিনের বাস্তবতা।

সরকারি উদ্যোগের অভাব, সেতু স্বপ্নেই সীমাবদ্ধ

এলজিইডি বা সেতু বিভাগ এখনো বাগধা খেয়াঘাটে সেতু নির্মাণের কোনো পরিকল্পনা নেয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী রবীন্দ্র চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “দুই পাশে ঘাটলা স্থাপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে টেন্ডার হলে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

একটি সেতুই পারে শিক্ষায় গতি, অর্থনীতিতে অগ্রগতি আনতে

স্থানীয়রা বলছেন, “শুধু সেতুটি হলে বদলে যাবে গোটা অঞ্চল। শিক্ষার্থীরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারবে, স্বাস্থ্যসেবায় পৌঁছানো সহজ হবে, কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণেও সুবিধা হবে।”

প্রতিবেদক : অপূর্ব লাল সরকার

সম্পাদনায় : সুমাইয়া/ তাবাসসুম/ মেহেদী