12:47 pm, Sunday, 23 November 2025

চা শ্রমিকদের অধিকার ও মর্যাদার লড়াই : শ্রম সংস্কার বাস্তবায়নের দাবিতে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সভায় ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ

  • Reporter Name
  • Update Time : 09:31:53 am, Monday, 21 July 2025
  • 121 Time View

বাংলাদেশের চা শিল্পের শ্রমিকরা আজ আর নিঃস্ব কণ্ঠে নয়—তারা এখন স্পষ্ট ভাষায় বলছেন, “বৈষম্যের অবসান চাই, মর্যাদাপূর্ণ অধিকার চাই।”

মৌলভীবাজার। ২১ জুলাই ২০২৫ —

২০ জুলাই ২০২৫, রোববার—শ্ররী শালিক রেস্টুরেন্টের দ্বিতীয় তলায় বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো এক ঐতিহাসিক প্রতিনিধি সভা। শ্লোগান ছিল শক্তিশালী ও সময়োপযোগী:
“জুলাই অভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুতি স্মরণ কর, চা শ্রমিকদের প্রতি বৈষম্যের অবসানে ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ তোল।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিপ্লব মাদ্রাজি পাশি
প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন এবং আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল

বক্তারা বলেন—চা শ্রমিকদের জীবনের প্রতিটি স্তরে বৈষম্য আজও প্রকট। ন্যূনতম মজুরি, নিরাপদ বাসস্থান, শিক্ষা-স্বাস্থ্য সুবিধা—সবই এখনো প্রাপ্য অধিকার নয়, বরং অবহেলিত অনুরোধে পরিণত। এই প্রেক্ষাপটে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ দ্রুত ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন জরুরি বলে বক্তারা জোর দেন।

মূল দাবিগুলো ছিল:

  • শ্রম আইন থেকে বৈষম্যমূলক ধারা (বিশেষ করে ধারা ৩২) সংশোধন

  • ন্যায্য ও মানবিক মজুরি কাঠামো প্রবর্তন

  • ভূমির অধিকার স্বীকৃতি

  • ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে পূর্ণ স্বাধীনতা

  • চা শ্রমিক ফেডারেশনের ৭ দফা বাস্তবায়ন

সভা শেষে আন্দোলনের পরবর্তী ধাপের জন্য বেশ কিছু কৌশলগত কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়—বাগানভিত্তিক প্রচারণা, জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের মতবিনিময় সভা এবং কর্মী সংগঠনের পুনর্গঠন।

মৌলভীবাজার জেলার সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করতে গঠন করা হয় নতুন জেলা কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটি—যার আহ্বায়ক নির্বাচিত হন দীপংকর ঘোষ, এবং সদস্য সচিব কিরণ শুক্ল বৈদ্য

সভার শুরুতে ইতিহাস ও সংগ্রামের প্রতি সম্মান জানিয়ে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

বিশ্লেষণ:

চা শ্রমিক ফেডারেশনের এই প্রতিনিধি সভা শুধু একটি সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কর্মসূচি নয়, বরং এটি হচ্ছে বাংলাদেশের শ্রমনীতি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ভবিষ্যৎ রচনার এক স্পষ্ট উচ্চারণ। বৈষম্যের জালে আবদ্ধ একটি প্রজন্ম এখন মর্যাদার আলোয় এগিয়ে যেতে প্রস্তুত।

প্রতিবেদক :  বিশ্বজিৎ নন্দী

সম্পাদনায় : সুমাইয়া/ তাবাসসুম/ মেহেদী

 

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

দ্রব্যমূল্য কমানো ও সর্বস্তরে রেশনিং চালুর দাবি

চা শ্রমিকদের অধিকার ও মর্যাদার লড়াই : শ্রম সংস্কার বাস্তবায়নের দাবিতে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সভায় ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ

Update Time : 09:31:53 am, Monday, 21 July 2025

বাংলাদেশের চা শিল্পের শ্রমিকরা আজ আর নিঃস্ব কণ্ঠে নয়—তারা এখন স্পষ্ট ভাষায় বলছেন, “বৈষম্যের অবসান চাই, মর্যাদাপূর্ণ অধিকার চাই।”

মৌলভীবাজার। ২১ জুলাই ২০২৫ —

২০ জুলাই ২০২৫, রোববার—শ্ররী শালিক রেস্টুরেন্টের দ্বিতীয় তলায় বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো এক ঐতিহাসিক প্রতিনিধি সভা। শ্লোগান ছিল শক্তিশালী ও সময়োপযোগী:
“জুলাই অভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুতি স্মরণ কর, চা শ্রমিকদের প্রতি বৈষম্যের অবসানে ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ তোল।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিপ্লব মাদ্রাজি পাশি
প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন এবং আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল

বক্তারা বলেন—চা শ্রমিকদের জীবনের প্রতিটি স্তরে বৈষম্য আজও প্রকট। ন্যূনতম মজুরি, নিরাপদ বাসস্থান, শিক্ষা-স্বাস্থ্য সুবিধা—সবই এখনো প্রাপ্য অধিকার নয়, বরং অবহেলিত অনুরোধে পরিণত। এই প্রেক্ষাপটে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ দ্রুত ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন জরুরি বলে বক্তারা জোর দেন।

মূল দাবিগুলো ছিল:

  • শ্রম আইন থেকে বৈষম্যমূলক ধারা (বিশেষ করে ধারা ৩২) সংশোধন

  • ন্যায্য ও মানবিক মজুরি কাঠামো প্রবর্তন

  • ভূমির অধিকার স্বীকৃতি

  • ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে পূর্ণ স্বাধীনতা

  • চা শ্রমিক ফেডারেশনের ৭ দফা বাস্তবায়ন

সভা শেষে আন্দোলনের পরবর্তী ধাপের জন্য বেশ কিছু কৌশলগত কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়—বাগানভিত্তিক প্রচারণা, জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের মতবিনিময় সভা এবং কর্মী সংগঠনের পুনর্গঠন।

মৌলভীবাজার জেলার সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করতে গঠন করা হয় নতুন জেলা কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটি—যার আহ্বায়ক নির্বাচিত হন দীপংকর ঘোষ, এবং সদস্য সচিব কিরণ শুক্ল বৈদ্য

সভার শুরুতে ইতিহাস ও সংগ্রামের প্রতি সম্মান জানিয়ে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

বিশ্লেষণ:

চা শ্রমিক ফেডারেশনের এই প্রতিনিধি সভা শুধু একটি সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কর্মসূচি নয়, বরং এটি হচ্ছে বাংলাদেশের শ্রমনীতি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ভবিষ্যৎ রচনার এক স্পষ্ট উচ্চারণ। বৈষম্যের জালে আবদ্ধ একটি প্রজন্ম এখন মর্যাদার আলোয় এগিয়ে যেতে প্রস্তুত।

প্রতিবেদক :  বিশ্বজিৎ নন্দী

সম্পাদনায় : সুমাইয়া/ তাবাসসুম/ মেহেদী