1:19 pm, Sunday, 23 November 2025

আগৈলঝাড়ার নৌকা শিল্প: বেঁচে থাকা ও সচ্ছলতার গল্প

  • Reporter Name
  • Update Time : 08:11:02 pm, Sunday, 13 July 2025
  • 57 Time View

আগৈলঝাড়া, বরিশাল | ১৩ জুলাই ২০২৫ —

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে বর্ষা মৌসুম মানেই নৌকার গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে আগৈলঝাড়া উপজেলার মতো জলবেষ্টিত অঞ্চলে নৌকা শুধু পরিবহনের মাধ্যম নয়, এটি জীবন-জীবিকার অটুট সঙ্গী। জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়কাল মৎস্যজীবীদের জন্য বিশেষ মরশুম। এই সময় তারা নৌকা নিয়ে মাছ শিকার করেন, যাতায়াত করেন, এমনকি তাদের সামাজিক-আর্থিক কার্যকলাপের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে এই জলযান।

আগৈলঝাড়ায় অর্ধ শতাধিক পরিবারের জীবিকা সরাসরি নির্ভর করে নৌকা নির্মাণের কারিগরিতেও। বর্ষার আগেই কাঠমিস্ত্রিরা বাড়িতে বসে তৈরি করেন বিভিন্ন আকারের নৌকা। জারুল, কদম, আম, রেইনট্রি প্রভৃতি কাঠ দিয়ে তৈরি এসব নৌকা স্থানীয় হাট-বাজারে বিক্রি হয়। এই শিল্প শুধু স্থানীয় চাহিদা মেটায় না, বরং পিরোজপুর, বরিশাল ও মাদারীপুরের পাইকাররাও এগুলো কিনে নিয়ে যান।

বর্ষাকালে কৃষি কাজ কম থাকায় কাঠমিস্ত্রিরা বেশি মনোযোগ দেন নৌকা তৈরিতে। পরিবারও এতে হাতবেগিয়ে সাহায্য করে। একটি নৌকা বিক্রি থেকে তাদের সচ্ছলতা ফিরে আসে, যা পরিবারের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

নৌকা কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতারা বর্ষার সময় সহজলভ্য ও কম দামি নৌকা পছন্দ করেন। কারণ এই সময় যাতায়াত, মাছ শিকার ও ঘাসপাতা সংগ্রহে নৌকার ওপর নির্ভরতা অনেক বেশি। মৎস্যজীবীরা বর্ষায় জাল পেতে ও বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করেন, যার জন্য ডিঙি নৌকা অপরিহার্য।

এই শিল্প একদিকে যেমন আগৈলঝাড়ার মানুষের অর্থনৈতিক সচ্ছলতার হাতিয়ার, অন্যদিকে বর্ষার পানিতে জীবনযাত্রার কঠিনতা কমানোর সেতুবন্ধন। বর্ষার জলবায়ুর সঙ্গে তাল মিলিয়ে গড়ে উঠেছে এই নৌকা শিল্প, যা আজো আগৈলঝাড়ার মানুষের সঙ্গী ও স্বপ্নের কারিগর।

রূপান্তর সংবাদ-এ প্রতিনিধি হোন!
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা সিভি পাঠান: E-mail : rupantorsongbad@gmail.com

প্রতিবেদক : অপূর্ব লাল সরকার

সম্পাদনায় : সুমাইয়া/ তাবাসসুম/ মাহমুদুল

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

দ্রব্যমূল্য কমানো ও সর্বস্তরে রেশনিং চালুর দাবি

আগৈলঝাড়ার নৌকা শিল্প: বেঁচে থাকা ও সচ্ছলতার গল্প

Update Time : 08:11:02 pm, Sunday, 13 July 2025

আগৈলঝাড়া, বরিশাল | ১৩ জুলাই ২০২৫ —

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে বর্ষা মৌসুম মানেই নৌকার গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে আগৈলঝাড়া উপজেলার মতো জলবেষ্টিত অঞ্চলে নৌকা শুধু পরিবহনের মাধ্যম নয়, এটি জীবন-জীবিকার অটুট সঙ্গী। জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়কাল মৎস্যজীবীদের জন্য বিশেষ মরশুম। এই সময় তারা নৌকা নিয়ে মাছ শিকার করেন, যাতায়াত করেন, এমনকি তাদের সামাজিক-আর্থিক কার্যকলাপের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে এই জলযান।

আগৈলঝাড়ায় অর্ধ শতাধিক পরিবারের জীবিকা সরাসরি নির্ভর করে নৌকা নির্মাণের কারিগরিতেও। বর্ষার আগেই কাঠমিস্ত্রিরা বাড়িতে বসে তৈরি করেন বিভিন্ন আকারের নৌকা। জারুল, কদম, আম, রেইনট্রি প্রভৃতি কাঠ দিয়ে তৈরি এসব নৌকা স্থানীয় হাট-বাজারে বিক্রি হয়। এই শিল্প শুধু স্থানীয় চাহিদা মেটায় না, বরং পিরোজপুর, বরিশাল ও মাদারীপুরের পাইকাররাও এগুলো কিনে নিয়ে যান।

বর্ষাকালে কৃষি কাজ কম থাকায় কাঠমিস্ত্রিরা বেশি মনোযোগ দেন নৌকা তৈরিতে। পরিবারও এতে হাতবেগিয়ে সাহায্য করে। একটি নৌকা বিক্রি থেকে তাদের সচ্ছলতা ফিরে আসে, যা পরিবারের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

নৌকা কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতারা বর্ষার সময় সহজলভ্য ও কম দামি নৌকা পছন্দ করেন। কারণ এই সময় যাতায়াত, মাছ শিকার ও ঘাসপাতা সংগ্রহে নৌকার ওপর নির্ভরতা অনেক বেশি। মৎস্যজীবীরা বর্ষায় জাল পেতে ও বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করেন, যার জন্য ডিঙি নৌকা অপরিহার্য।

এই শিল্প একদিকে যেমন আগৈলঝাড়ার মানুষের অর্থনৈতিক সচ্ছলতার হাতিয়ার, অন্যদিকে বর্ষার পানিতে জীবনযাত্রার কঠিনতা কমানোর সেতুবন্ধন। বর্ষার জলবায়ুর সঙ্গে তাল মিলিয়ে গড়ে উঠেছে এই নৌকা শিল্প, যা আজো আগৈলঝাড়ার মানুষের সঙ্গী ও স্বপ্নের কারিগর।

রূপান্তর সংবাদ-এ প্রতিনিধি হোন!
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা সিভি পাঠান: E-mail : rupantorsongbad@gmail.com

প্রতিবেদক : অপূর্ব লাল সরকার

সম্পাদনায় : সুমাইয়া/ তাবাসসুম/ মাহমুদুল