1:36 pm, Sunday, 23 November 2025

সিলেটে ডিজিটাল প্রতারণার ফাঁদে বিকাশ-নগদের টাকা লোপাট: গ্রেফতার দুই তরুণ

  • Reporter Name
  • Update Time : 07:59:07 pm, Thursday, 10 July 2025
  • 23 Time View

সিলেট। ১০ জুলাই ২০২৫-

স্মার্টফোন আর ডিজিটাল ওয়ালেটের যুগে মানুষ যতটা সচেতন হতে চায়, ততটাই ফাঁদ পাতছে প্রতারক চক্র। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা যেখানে মানুষের হাতের মুঠোয়, সেখানে নতুন প্রজন্মের একদল প্রতারকও এখন ঠিক হাতের মুঠোতেই টাকা নিয়ে নিচ্ছে! এমনই এক চক্রের দুই সদস্যকে সিলেটে গ্রেফতার করেছে মহানগর পুলিশের (এসএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

ধরা পড়লো শাহজালাল মাজার গেইটে

গত বুধবার (৯ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার এলাকায় গোপন অভিযানে ধরা পড়ে তারা। গ্রেফতারকৃত দুই তরুণ হলেন কক্সবাজার জেলার মহেশখালী থানার কালারমারছড়া ইউনিয়নের মো. ওসামন গনি (২১) ও মো. ফরহাদ আহম্মদ (২২)। দুজনই স্থানীয়ভাবে ‘ছোটখাটো’ ছেলে হিসেবেই পরিচিত ছিলেন, কিন্তু হাতের কাজের ছক ছিল অনেক বড়!

কৌশলের জালে দোকানির পিন

ডিবি জানিয়েছে, কমিশনার মো. রেজাউল করিম পিপিএম-সেবা’র নির্দেশে দীর্ঘদিন ধরে নজরদারিতে ছিল চক্রটি। তদন্তে বেরিয়ে আসে ভয়াবহ তথ্য—৮ জুলাই তারা নগরীর মদিনা মার্কেট ও শাহজালাল গেইট এলাকায় নগদ এজেন্ট দোকানে গিয়ে বিক্রেতার অজান্তেই তার মোবাইলের পিন সংগ্রহ করে নেয়। এরপর একাধিক ই-ট্রানজাকশনের মাধ্যমে মুহূর্তেই লোপাট হয় ৩০ হাজার ও ৪৯ হাজার টাকা।

লুকিয়ে রাখা প্রযুক্তির ভাণ্ডার

ডিবির অভিযানে ধরা পড়েছে তাদের ‘অস্ত্রভাণ্ডার’। উদ্ধার হয়েছে তিনটি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন, দুটি বাটন ফোন, মোট ১২টি সিমকার্ড আর নগদ ৪০ হাজার ৫৪০ টাকা। এসবই ডিজিটাল প্রতারণার ‘অস্ত্র’।

‘ছেলেগুলো ভালো’—প্রতারণা আরও ভয়াবহ!

পাড়ার মানুষ বলছে, ‘ছেলেগুলো ভালোই আছিল!’ কিন্তু স্মার্টফোনের পেছনে বসে কীভাবে শতশত মানুষের কষ্টার্জিত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল—তা জানতো না কেউ। মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণার এই নতুন ধরন আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, সচেতন না হলে প্রযুক্তি যেমন সুবিধা দেয়, তেমন সর্বনাশও ডেকে আনে।

ডিবির হুঁশিয়ারি

এসএমপি ডিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। একইসঙ্গে তারা নগরের সকল বিকাশ-নগদ এজেন্টদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন—কোনোভাবেই কাউকে পিন বা ব্যক্তিগত তথ্য না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

‘পিন কেউ নেবে কেন?’

মোবাইল ব্যাংকিং নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রতারণা রুখতে প্রথম শর্ত—সচেতনতা। দোকানদার হোক বা সাধারণ গ্রাহক—কেউ যেন কোনো অবস্থাতেই কারো সঙ্গে পিন শেয়ার না করে। ‘পিন কেউ নেবে কেন?’—এমন প্রশ্ন মনে থাকলেই অনেক বড় ক্ষতি এড়ানো সম্ভব।

শেষ কথা

প্রযুক্তির সুবিধা যেমন অগাধ, তেমনি এর ফাঁদও নিখুঁত। তাই সতর্কতা আর সচেতনতা—এটাই ডিজিটাল যুগের নিরাপদ সঙ্গী। সিলেটে দুই প্রতারকের গ্রেফতারে অস্থিরতা কিছুটা কমলেও, প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে—আরও কত চক্র ঘাপটি মেরে আছে?

রূপান্তর সংবাদ-এ প্রতিনিধি হোন!
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা সিভি পাঠান: E-mail : rupantorsongbad@gmail.com

প্রতিবেদক : আহমদুল হাসান

সম্পাদনায় : আসমা/ তাবাসসুম/ মাহমুদুল

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

দ্রব্যমূল্য কমানো ও সর্বস্তরে রেশনিং চালুর দাবি

সিলেটে ডিজিটাল প্রতারণার ফাঁদে বিকাশ-নগদের টাকা লোপাট: গ্রেফতার দুই তরুণ

Update Time : 07:59:07 pm, Thursday, 10 July 2025

সিলেট। ১০ জুলাই ২০২৫-

স্মার্টফোন আর ডিজিটাল ওয়ালেটের যুগে মানুষ যতটা সচেতন হতে চায়, ততটাই ফাঁদ পাতছে প্রতারক চক্র। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা যেখানে মানুষের হাতের মুঠোয়, সেখানে নতুন প্রজন্মের একদল প্রতারকও এখন ঠিক হাতের মুঠোতেই টাকা নিয়ে নিচ্ছে! এমনই এক চক্রের দুই সদস্যকে সিলেটে গ্রেফতার করেছে মহানগর পুলিশের (এসএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

ধরা পড়লো শাহজালাল মাজার গেইটে

গত বুধবার (৯ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার এলাকায় গোপন অভিযানে ধরা পড়ে তারা। গ্রেফতারকৃত দুই তরুণ হলেন কক্সবাজার জেলার মহেশখালী থানার কালারমারছড়া ইউনিয়নের মো. ওসামন গনি (২১) ও মো. ফরহাদ আহম্মদ (২২)। দুজনই স্থানীয়ভাবে ‘ছোটখাটো’ ছেলে হিসেবেই পরিচিত ছিলেন, কিন্তু হাতের কাজের ছক ছিল অনেক বড়!

কৌশলের জালে দোকানির পিন

ডিবি জানিয়েছে, কমিশনার মো. রেজাউল করিম পিপিএম-সেবা’র নির্দেশে দীর্ঘদিন ধরে নজরদারিতে ছিল চক্রটি। তদন্তে বেরিয়ে আসে ভয়াবহ তথ্য—৮ জুলাই তারা নগরীর মদিনা মার্কেট ও শাহজালাল গেইট এলাকায় নগদ এজেন্ট দোকানে গিয়ে বিক্রেতার অজান্তেই তার মোবাইলের পিন সংগ্রহ করে নেয়। এরপর একাধিক ই-ট্রানজাকশনের মাধ্যমে মুহূর্তেই লোপাট হয় ৩০ হাজার ও ৪৯ হাজার টাকা।

লুকিয়ে রাখা প্রযুক্তির ভাণ্ডার

ডিবির অভিযানে ধরা পড়েছে তাদের ‘অস্ত্রভাণ্ডার’। উদ্ধার হয়েছে তিনটি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন, দুটি বাটন ফোন, মোট ১২টি সিমকার্ড আর নগদ ৪০ হাজার ৫৪০ টাকা। এসবই ডিজিটাল প্রতারণার ‘অস্ত্র’।

‘ছেলেগুলো ভালো’—প্রতারণা আরও ভয়াবহ!

পাড়ার মানুষ বলছে, ‘ছেলেগুলো ভালোই আছিল!’ কিন্তু স্মার্টফোনের পেছনে বসে কীভাবে শতশত মানুষের কষ্টার্জিত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল—তা জানতো না কেউ। মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণার এই নতুন ধরন আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, সচেতন না হলে প্রযুক্তি যেমন সুবিধা দেয়, তেমন সর্বনাশও ডেকে আনে।

ডিবির হুঁশিয়ারি

এসএমপি ডিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। একইসঙ্গে তারা নগরের সকল বিকাশ-নগদ এজেন্টদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন—কোনোভাবেই কাউকে পিন বা ব্যক্তিগত তথ্য না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

‘পিন কেউ নেবে কেন?’

মোবাইল ব্যাংকিং নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রতারণা রুখতে প্রথম শর্ত—সচেতনতা। দোকানদার হোক বা সাধারণ গ্রাহক—কেউ যেন কোনো অবস্থাতেই কারো সঙ্গে পিন শেয়ার না করে। ‘পিন কেউ নেবে কেন?’—এমন প্রশ্ন মনে থাকলেই অনেক বড় ক্ষতি এড়ানো সম্ভব।

শেষ কথা

প্রযুক্তির সুবিধা যেমন অগাধ, তেমনি এর ফাঁদও নিখুঁত। তাই সতর্কতা আর সচেতনতা—এটাই ডিজিটাল যুগের নিরাপদ সঙ্গী। সিলেটে দুই প্রতারকের গ্রেফতারে অস্থিরতা কিছুটা কমলেও, প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে—আরও কত চক্র ঘাপটি মেরে আছে?

রূপান্তর সংবাদ-এ প্রতিনিধি হোন!
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা সিভি পাঠান: E-mail : rupantorsongbad@gmail.com

প্রতিবেদক : আহমদুল হাসান

সম্পাদনায় : আসমা/ তাবাসসুম/ মাহমুদুল